Friday, 21 May 2021

What is Attention? Definition of Attention. Characteristics of Attention. মনোযোগ কাকে বলে?মনোযোগের সংজ্ঞা, প্রকৃতি/বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।

 Attention 
মনোযোগ 


শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের গুরুত্ব অপরিসীম।শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক/শিক্ষিকা, অভিভাবকরা প্রায়ই শিক্ষার্থীদের উপদেশ দেন -- '' মন দিয়ে পড়াশোনা করো"! অর্থাৎ, পরিবেশের অনেক উপাদান বা বিষয় রয়েছে, তার মধ্যে পড়াশোনার প্রতি অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি অধিক সক্রিয় বা গুরুত্ব দেওয়ার কথা এখানে বলা হচ্ছে, ইহাই মনোযোগ (Attention) বলে।

Definition of Attention 
মনোযোগের সংজ্ঞা 

কুল্পে (Kulpe) এর মতে, মনোযোগ হল একটি চেতন মনের অবস্থা।

"Attention is state of consciousness".

স্যান্ত্রক (Santrock) এর মতে, "Attention involves concentrating and focusing mental resources."

R.N.Sharma এর মতে, মনোযোগ হল একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যা ব্যাক্তিকে পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত বহু উদ্দীপকের মধ্যে থেকে তার আগ্রহ ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বিশেষ উদ্দীপকটিকে নির্বাচন করতে বাধ্য করে।"

সুতরাং , মনোযোগ হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা ব্যাক্তিকে পরিবেশের একাধিক উদ্দীপকের মধ্যে থেকে এক বা সীমিত কয়েকটি উদ্দীপক সম্পর্কে সচেতন ও সক্রিয় করে তোলে ।

Stages of Attention 

 মনোযোগের স্তর 

মনোযোগের তিনটি স্তর - 

1. অবচেতন স্তর

2. প্রাক চেতন স্তর

3. চেতন স্তর।

Nature/Characteristics of Attention

মনোযোগের বৈশিষ্ট্য 

1. কেন্দ্রনুগ প্রক্রিয়া : টিচেনার এর মতে, মনোযোগের দুটি স্তর, কেন্দ্রীয় ও প্রান্তীয় চেতনার স্তর।যখন কোনো উদ্দীপক আমাদের চেতনার কেন্দ্রীয় স্তরে প্রবেশ করে তখন আমরা তার প্রতি মনোযোগী হয়।

2. নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া : পরিবেশের অনেক উদ্দীপকের মধ্যে থেকে যে কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে নির্বাচন করে চেতনার কেন্দ্রীয় স্তরে নিয়ে আসা হয়, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া হল মনোযোগ ।

3. পরিবর্তনশীলতা : মনোযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল পরিবর্তনশীলতা,অর্থাৎ কোনো একটি বিষয়ের প্রতি ইচ্ছাশক্তি থাকা সত্বেও আমরা বেশিক্ষন সক্রিয় বা মনোযোগী থাকতে পারি না।মনোযোগ সর্বদা পরিবর্তনশীল।মনোযোগের পরিবর্তনশীলতা পরিমাপ করা হয় "Tachistoscope".

4. নতুনত্ব : মনোযোগের গুরুত্ত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল নতুনত্ব।অর্থাৎ, নিত্যনতুন বিষয়বস্তু অনুসন্ধান করা এবং তার বৈচিত্র্য সম্পর্ক জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করাই মনোযোগের বৈশিষ্ট্য ।

5. সংশ্লেষ ও বিশ্লেষণধর্মী প্রক্রিয়া : কোনো বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হতে গেলে সেই বিষয় বা বস্তুর বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করে এবং প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি সংশ্লেষণ করা এবং তার প্রতি মনোযোগী হওয়া মনোযোগের বৈশিষ্ট্য ।

6. সঞ্চালনমূলক পরিবর্তন : মনোযোগ দেওয়ার সময় আমাদের দৈহিক পরিবর্তন ঘটে।অর্থাৎ অঙ্গসঞ্চালনমূলক , ইন্দ্রিয়গত এবং স্নায়ুঘটিত পরিবর্তন হয়। যেমন : ক্রিকেট খেলা দেখার সময় খেলার চরম মুহুর্তে স্কোরের প্রতি মনোযোগী হয় এবং আমাদের ভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে ।

7. মনোযোগ ও আগ্রহ : ম্যাকডুগালের মতে. মনোযোগ হল সক্রিয় আগ্রহ আর আগ্রহ হল সুপ্ত মনোযোগ ।

8. সীমাবদ্ধ প্রক্রিয়া : মনোযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল মনোযোগের সীমাবদ্ধতা।অর্থাৎ , একই সময়ে আমরা অনেক বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হতে পারি না।

                   সুতরাং, মনোযোগ হল একটি নির্বাচনধর্মী  পরিবর্তনশীল মানসিক প্রক্রিয়া যা ব্যাক্তিকে অনেকগুলি বিষয়ের মধ্যে থেকে একটি বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হতে সাহায্য করে। 

Thursday, 20 May 2021

What is Motivation? Definition of Motivation.Types of Motivation. Characteristics of Motivation. প্রেষনা কি?প্রেষনার বৈশিষ্ট্য,প্রেষনার শ্রেণীবিভাগ লেখো।

 প্রেষনা কি ? 
What is Motivation 


ব্যাক্তির চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই। একটি চাহিদাপুরণের সাথে সাথেই ওপর একটি নতুন চাহিদার সৃষ্টি হয় এবং মানুষ তা পূরণ করতে বিভিন্ন আচরন করতে থাকে।মানুষের প্রত্যেকটি আচরণের পিছনেই থাকে কোনো না কোনো অভাববোধ বা চাহিদা আর এই অভাববোধ দূর করার আকাঙ্ক্ষা। অর্থাৎ , অভাববোধ বা চাহিদাপূরণের জন্য ব্যাক্তি যে আচরন করে এবং উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলে , তাইই হল প্রেষনা বা Motivation.


          "প্রেষনা" শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল "Motivation". এই শব্দটি ল্যাটিন শব্দ "Moveers" থেকে এসেছে।"Moveers" শব্দটির অর্থ হল "To Move" বা "এগিয়ে যাওয়া"। অর্থাৎ "প্রেষনা" শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল, অভাববোধ বা চাহিদাপূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।


Definition of Motivation

প্রেষনার সংজ্ঞা 


মনোবিদ সুইফট (Swift) - এর মতে, যে পরিবর্তনশীল মানসিক প্রক্রিয়া ব্যাক্তির নানা প্রকার চাহিদা পূরনের জন্য,তার আচরন ধারাকে নিয়ন্ত্রণ করে,তাই ই হল প্রেষনা বা Motivation.

"Motivation is a dynamic process initiating and directing behaviour continuous but fluctuating in intensities and aim at satisfaction of the individual's needs."


মনোবিদ ক্রাইডার (Cryder) বলেন, "যে প্রক্রিয়া ব্যাক্তির আগ্রহ, আকাঙ্ক্ষা এবং প্রয়োজনকে সক্রিয় বা কর্মদ্যোগী করে তোলে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের দিকে পরিচালিত করে, তাকে প্রেষনা বা Motivation বলে ।''

Motivation Cycle
প্রেষনা চক্র 

প্রেষনা যে চারটি স্তরের মধ্যে দিয়ে চক্রাকারে আবর্তিত হয় এবং অর্থবোধক আচরন করে অর্থাৎ লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে যায়, তাকেই প্রেষনাচক্র(Motivation Cycle) বলে। এই চারটি স্তর হল - 

1. অভাববোধ বা চাহিদা (Need)

2. তাড়না (Drive)

3. সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরন (Instrumental Behaviour)

4. লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য (Goal) ।


Types/Classification of Motivation 

প্রেষনার শ্রেণীবিভাগ 

প্রেষনাকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-


1. জৈবিক প্রেষনা Physiological Motivation) : ব্যাক্তির জীবনধারনের জন্য অর্থাৎ শারীরবৃত্তীয় বা জৈবিক চাহিদা পূরনের জন্য যে প্রেষনার সৃষ্টি হয়,তাই হল জৈবিক প্রেষনা

যেমন : ক্ষুধা,তৃষ্ণা, মাতৃত্ব ইত্যাদি।


2. ব্যাক্তিগত প্রেষনা(Personal Motivation) : যে চাহিদা ব্যাক্তির মানসিক বা           আত্মসচেতনতার সঙ্গে যুক্ত ,সেই প্রেষনাগুলিকে ব্যাক্তিগত প্রেষনা বলে।

যেমন : আত্মশ্রদ্ধার চাহিদা, মূল্যবোধ,মনোভাব ইত্যাদি ।


3. সামাজিক প্রেষনা(Social Motivation) : সমাজে বসবাস করতে গেলে ব্যাক্তির সামাজিক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে যে চাহিদার সৃষ্টি হয় তাই হল সামাজিক চাহিদা

 যেমন : নিরাপত্তা,ভালোবাসা,খ্যাতির চাহিদা ইত্যাদি।


Nature/ Characteristics of Motivation 
প্রেষনার বৈশিষ্ট্য 


প্রেষনার বৈশিষ্ট্য হল - 

1. অভ্যন্তরীণ ও ব্যাক্তিগত : প্রেষনা অভ্যন্তরীণ ও ব্যাক্তিগত কারন ইহা আমাদের অভাববোধ বা চাহিদা থেকে সৃষ্টি হয় এবং তা পূরণ করাই প্রেষনার বৈশিষ্ট্য ।

2. ব্যাক্তিগত পার্থক্য : প্রেষনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল ব্যাক্তিগত পার্থক্য।কারণ  ব্যাক্তি অনুযায়ী প্রেষণার পার্থক্য দেখা যায়।অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন প্রেষণার সৃষ্টি হয়।

3. সময় অনুযায়ী পরিবর্তন : ব্যাক্তির প্রেষণা সবসময় একই রকম থাকে না। সময়মত প্রেষণার পরিবর্তন হয়।এক ধরনের চাহিদা পূরন হলে সেই চাহিদার তীব্রতা কমে যায় এবং পরবর্তী চাহিদার তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।

4. আচরণের পরিবর্তন: প্রেষণার ফলে ব্যাক্তির আচরণের পরিবর্তন ঘটে।তাড়না শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন আচরণের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে যা প্রেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

5. পরিবর্তনশীলতা : প্রেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল পরিবর্তনশীলতা। চাহিদার সাথে সাথেই ব্যাক্তির তাড়নার পরিবর্তন হয়।

6. ব্যাক্তিজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখা : প্রেষণা ব্যাক্তির চাহিদা পূরনের মধ্যে দিয়ে ব্যাক্তিজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা প্রেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ।

7. মিথষ্ক্রিয়া : প্রেষণা ব্যাক্তিকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে অর্থাৎ পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর পরিবেশের সাথে আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করাই প্রেষণার বৈশিষ্ট্য ।

8. উদ্দেশ্যমূখি আচরন : প্রেষণা ব্যাক্তিকে তার উদ্দেশমুখী আচরন করতে শেখায়, যার মধ্যে দিয়ে ব্যাক্তি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে, যা প্রেষণার বৈশিষ্ট্য।


9. কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি : ব্যাক্তির চাহিদার প্রকৃতি অনুযায়ী ব্যাক্তির কর্মতৎপরতা কখনও কমে আবার কখনও বৃদ্ধি পায়।তাই প্রেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল ব্যাক্তির কর্মতৎরতা বৃদ্ধি করা অর্থাৎ কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করা।


                 সুতরাং , প্রেষণা বা Motivation শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে এবং জীবনের ভারসাম্য বজায় রেখে আদর্শ ব্যাক্তিত্ব গঠনে সাহায্য করে।



শিখনে প্রেষণার ভূমিকা 
Role of Motivation in Learning 

প্রেষণা ব্যাক্তিকে নতুন কিছু করতে যেমন উদ্ধুদ্ধ করে তেমনি লক্ষ্যে পৌঁছানোর শক্তিরূপে কাজ করে। শিখনে প্রেষণার ভূমিকা নিম্নে আলোচনা করা হল - 


1. প্রেষণা ব্যাক্তির মধ্যে কাজ করার আগ্রহ বা শক্তি জোগায় ।

2. প্রেষণা শিক্ষার্থীর লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে এবং তার আচরন নির্দিষ্ট করে।

3. প্রেষণার ফলে  শিক্ষার্থী কাজে উদ্যোগী হয় এবং কাজটি যথাযথভাবে সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করে।

4. প্রেষণা ব্যাক্তির শিখন কৌশলকে প্রভাবিত করে এবং নতুন কিছু শেখার প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে।

5. প্রেষণা শিক্ষার্থীর মনোযোগ দিতে সাহায্য করে।

6. প্রেষণা শিক্ষার্থীর আচরণের গতিপথ নির্ণয় করে এবং অপ্রয়োজীয় আচরণগুলি ত্যাগ করে সঠিক বা প্রয়োজনীয় আচরন বেছে নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে।



Wednesday, 19 May 2021

UNIVERSITY OF KALYANI (EDUCATION HONOURS) SEMESTER - 1

 UNIVERSITY OF KALYANI 


(EDUCATION HONOURS)


 SEMESTER - 1


EDU-H-CC-T-1

Philosophical foundation of Education-I 


Unit-I: Concept, Scope and Aim of Education


a) Meaning, Nature and Scope of Education.
b) Individualistic and socialistic aim.
c) Report of Delor’s commission (UNESCO, 1996)
d) Meaning and scope of Educational Philosophy; Relation between education and philosophy.


Unit-II: Factors of Education:


a) Child: Meaning and characteristics of child centric education system.
b) Teacher: Qualities and duties of a good teacher. Teacher as a motivator, mentor,
facilitator and problem solver.
c) Curriculum: Meaning and Types. Co-curricular activities.
d) School: vision and functions.


Unit-III: Schools of Philosophy


a) Sankhya, and Yoga in terms of knowledge, reality and value.
b) Buddhism and Jainism


Unit-IV: Great Educators and their educational philosophy


a) Indian: Swami Vivekananda, Rabindranath Tagore, Mahatma Gandhi.
b) Western: Rousseau, Dewey, Froebel



EDU-H-CC-T-2            Sociological foundation of Education 

Unit-I: Educational Sociology

a) Meaning, nature and scope of Educational sociology.
b) Relation between education and sociology.
c) Concept of Educational sociology and sociology of education.


Unit-II: Social factors, issues and Education


a) Culture: Concept, role of education in culture, cultural lag.
b) Meaning of Human Resource Development and its significance in the present society.
c) Social issues: unemployment, poverty, education of socially and economically backward
classes, disadvantage section of Indian society (SC, ST and OBC).


Unit-III: Social groups and Education


a) Social groups- meaning and types (Primary, Secondary and Tertiary)
b) Socialization: Meaning, process and factors of socialization, role of the family and
school.
c) Social Institutions and Agencies of Education: (i) Family, (ii) School, (iii) State, (iv)
Mass media and (v) Religion


Unit-IV: Social change and Education


a) Social change: definition, characteristics, factors, constraints and education as an
instrument of social change.
b) Social change in India (Privatization and Globalization)
c) Education and social stratification: Definition and characteristics
d) Education and Social Mobility


3.পরিনমন(Maturation) কাকে বলে ? পরিনমনের বৈশিষ্ট্য লেখো।শিখন ও পরিনমনের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো। Characteristics of Maturation. Differences between Learning and Maturation.

 পরিনমন 

  (Maturation) 


শিখনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম উপাদান হল পরিনমন (Maturation)। শিশু জন্মের পর থেকে ধীরে ধীরে বড়ো হতে থাকে, তখন তার দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের জন্য কোনো প্রকার অনুশীলন বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না, ব্যাক্তির মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই এই যে পরিবর্তন সংঘটিত হয় , তাকেই পরিনমন (Maturation) বলে।


• পরিনমণের সংজ্ঞা 

(Definition of Maturation) 


মনোবিদ কোলেসনিক (Kolesnick) পরিনমনের সংজ্ঞায় বলেছেন, সহজাত সম্ভাবনাগুলির স্বাভাবিক বিকাশের ফলে ব্যাক্তির গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তনকেই পরিনমণ বলে। এককথায় সহজাত সম্ভাবনাগুলির বাস্তবায়নই হল  পরিনমন (Maturation).

 

মনোবিদ ম্যাকগিয়ক (McGeoch) বলেন, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে অনুশীলন ও অভিজ্ঞতার পরিবর্তে প্রধানত জৈবিক কারণে ব্যাক্তির আচরণের পরিবর্তনকেই  পরিনমন (Maturation) বলে।

 

মনোবিদ গেসেল (Gesell) এর মতে, স্বকীয় ও অন্তর্জাত বৃদ্ধিই হল পরিনমন (Maturation)।



• পরিনমনের বৈশিষ্ট্য 
(Characteristics of Maturation) 


1. বিকাশের প্রক্রিয়া: পরিনমণ হল বিকাশমূলক প্রক্রিয়া।এই প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রাণীর আচরন পরিবর্তন ঘটে । এর ফলে হৃৎপিণ্ড,পাকস্থলী প্রভৃতির আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং এগুলির কর্মক্ষমতার বিকাশ ঘটে ।


2. সহজাত ও সর্বজনীন প্রক্রিয়া: পরিনমন ব্যাক্তির জন্মগত সূত্রে প্রাপ্ত সম্ভাবনা এবং সর্বজনীন প্রক্রিয়া।সব শিশুই এই নিয়মেই ছোটো থেকে বড়ো হয়।


3. স্বাভাবিক প্রক্রিয়া: পরিনমন একপ্রকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।ব্যাক্তির সুস্থতাই পরিনমনের একমাত্র শর্ত।অসুস্থতা পরিনমনে বাধার সৃষ্টি করে।


4. অনুশীলন নিরপেক্ষ : আগেই বলা হয়েছে পরিনমন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এর জন্য কোনো প্রকার অনুশীলন বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না।তাই পরিনমনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল পরিনমন অনুশীলন নিরপেক্ষ। 


5. চাহিদা নিরপেক্ষ : পরিনমনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল পরিনমন চাহিদা নিরপেক্ষ।কারণ পরিনমনের জন্য কোনো চাহিদার প্রয়োজন হয় না, কিন্তু পরিনমনের ফলেই চাহিদার সৃষ্টি হয়।


6. শারীরিক ক্ষমতা অর্জনে সহায়ক : পরিনমন ব্যাক্তির শারীরিক ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে।


7. জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া : ব্যাক্তির দেহের জৈবিক কেন্দ্রগুলির উপর ভিত্তি করেই পরিনমন সম্পন্ন হয়।


8. আত্মসক্রিয়তা নিরপেক্ষ : পরিনমনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল, এই প্রক্রিয়ার জন্য কোনো প্রকার ব্যাক্তির আত্মসক্রিয়তার প্রয়োজন হয় না।তবে সক্রিয়তা ব্যাক্তির পরিনমণকে ত্বরান্বিত করে।


9. আংশিক জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া : পরিনমন হল একপ্রকার আংশিক জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া, কারণ এই প্রক্রিয়া শিশুর মাতৃগর্ভে  শুরু হয়, কিন্তু জীবনের এক পর্যায়ে এসে থেমে যায়, তাই পরিনমন হল একপ্রকার আংশিক জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া।



              তাই উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, যে সর্বজনীন স্বাভাবিক, সহজাত , জৈবিক, অনুশীলন ও চাহিদা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া শিশুর বিকাশ ও শারীরিক ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে,তাকেই পরিনমন (Maturation) বলে।


• শিখন ও পরিনমনের মধ্যে পার্থক্য 

(Differences between Learning and Maturation)


 1. শিখন একটি মানসিক প্রক্রিয়া।

        কিন্তু পরিনমন একটি জৈবিক প্রক্রিয়া ।


2. শিখন কৃত্রিম প্রক্রিয়া ।

       কিন্তু পরিনমন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।


3. শিখনের জন্য শিশুর মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়।

       কিন্তু পরিনমনের জন্য শিশুর মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না।


4. শিখন শর্তসাপেক্ষ প্রক্রিয়া ।

          কিন্তু পরিনমনের জন্য কোনো প্রকার শর্তের প্রয়োজন হয় না


5. শিখন সারা জীবনব্যাপি প্রক্রিয়া।

       কিন্তু পরিনমন ব্যাক্তির নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত চলে।


6. শিখন অনুশীলননির্ভর প্রক্রিয়া, এর জন্য অনুশীলনের প্রয়োজন হয়।

           কিন্তু পরিনমন অনুশীলন নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া।


7. শিখন ব্যাক্তির জীবনের গুণগত পরিবর্তন ঘটায়।

        কিন্তু পরিনমন ব্যাক্তির গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তন ঘটায় ।


8. শিখন ব্যাক্তির অভিজ্ঞতা নির্ভর প্রক্রিয়া।

       কিন্তু পরিনমন ব্যাক্তির অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে না।




          সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, শিখন ও পরিনমন উভয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া শিশুর জ্ঞানার্জনের জন্য।শিশুর শিখনের জন্য পরিনমনের প্রয়োজন হয়।

Tuesday, 18 May 2021

শিখনের প্রকারভেদ : গ্যাগনি Types of Learning : Gagne

 শিখনের প্রকারভেদ : গ্যাগনি 


Types of Learning : Gagne 


আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী রবার্ট এম. গ্যাগনি (Robert M.Gagne) 1956 সালে ব্যাক্তির মানসিক প্রক্রিয়াসমুহের জটিলতার উপর ভিত্তি করে তিনি শিখনের আটটি (8) শ্রেণীবিভাগ করেছেন। সেগুলি হল - 

1. সংকেত শিখন (Signal Learning)

2. উদ্দীপক - প্রতিক্রিয়ার শিখন (Stimulus - Response Learning)

3. শৃঙ্খলিতকরণ শিখন (Chaining Learning)

4. বাচনিক শিখন (Verbal Association)

5. বিনিশ্চয়/পৃথকীরণ শিখন (Discrimination Learning)

6. ধারণার শিখন (Concept Learning)

7. নিয়ম শিখন (Rule Learning)

8. সমস্যা - সমাধানের শিখন (Problem solving Learning)


               মনোবিদ গ্যাগনি পরবর্তীতে 1970 সালে তাঁর "The Condition of Learning" বইতে তিনি শিখনের এই শ্রেণীবিভাগ গুলির প্রথম চারটি পর্যায় আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গি (Behavioral Approach) এবং এগুলি নিম্নস্তরের শিখন ।

আর পরবর্তী চারটি অর্থাৎ পাঁচ থেকে আট পর্যায়ের শিখন হল প্রজ্ঞামূলক দৃষ্টিভঙ্গি (Cognitive Approach) এবং এগুলি উচ্চ পর্যায়ের শিখন এবং জটিল প্রকৃতির । নিম্নে বর্ণিত আটপ্রকার শিখন সম্পর্কে আলোচনা করা হল - 


1. সংকেত শিখন (Signal Learning): সবচেয়ে সহজ প্রকৃতির শিখন হল মনোবিদ পাভলভ (Pavlov) রচিত সংকেত শিখন (Signal Learning)। অর্থাৎ আমরা সংকেতের মধ্যে দিয়ে যখন জ্ঞান অর্জন করতে পারি তখন যে শিখন হয়, তাই হল সংকেত শিখন (Signal Learning)।

যেমন : Green Signal ট্রেন আসার সংকেত বোঝায়।


2. উদ্দীপক - প্রতিক্রিয়ার শিখন (Stimulus - Response Learning): মনোবিদ স্কিনার (Skinner) রচিত সক্রিয় অনুবর্তন হল এই ধরনের শিখন (Stimulus - Response Learning), অর্থাৎ উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে যে বন্ধন সৃষ্টি হয়।


3. শৃঙ্খলিত করণ শিখন (Chaining Learning): এই শিখনে শিক্ষণীয় বিষয়গুলি  দক্ষতার সঙ্গে পরপর সংযুক্ত করে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধারাবাহিকতা বা শৃঙ্খলাবোধের জন্ম হয়, এটাই Chain Learning.


4. বাচনিক শিখন (Verbal Association): এটিও এক ধরনের শৃঙ্খলিত করণ শিখন। এখানে প্রধান উপাদান হল ভাষা, যার দ্বারা আমরা বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে সংযোগ সাধন করতে পারি। এই শিখনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।


5. বিনিশ্চয়/পৃথকীকরণ শিখন (Discrimination Learning): এই ধরনের শিখন প্রক্রিয়া কঠিন ও জটিল। এখানে একই উদ্দীপক বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার মধ্যে সঠিক ও ভুল উভয় ধরনেরই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।আমরা এই শিখনের সাহায্যেই সঠিক প্রতিক্রিয়া সম্পকে জ্ঞান অর্জন করতে পারি।


6. ধারণার শিখন (Concept Learning): ধারণা হল কোনো বস্তু সম্পর্কে সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন করা।অর্থাৎ, কোনো ব্যাক্তি তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোনো বিষয়বস্তুর সাধারণ কতগুলি বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে, তাই হল ধারণার শিখন (Concept Learning)।


7. নিয়ম শিখন (Rule Learning): এই শিখন অতি উচ্চমানের প্রজ্ঞামূলক (Cognitive) শিক্ষণপদ্ধতি। এই শিখনের সাহায্যে শিক্ষার্থীরা পরপর বিভিন্ন ধারণার সাহায্যে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত গঠন করে এবং তারা মনে করে যে একটি ঘটনা ঘটলে অপরও ঘটবে অর্থাৎ একটি ঘটনা ওপর ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত।


8. সমস্যা - সমাধনমুলক শিখন (Problem Solving Learning): শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করাই হল শিখনের মূল লক্ষ্য অর্থাৎ,শেষ কথা।যখন শিক্ষার্থী বার বার কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং তা সমাধানের জন্য যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করাই হল সমস্যা সমাধনমূলক শিখন (Problem Solving Learning)।



              মনোবিদ গ্যাগনির শিখনের পর্যায়গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।যা শিক্ষার্থীর শিখনে সাহায্য করে।

মুদালিয়ার কমিশন (1952-53) Mudaliar Commission (1952-53)

 মুদালিয়ার কমিশন (1952-53) Mudaliar Commission Secondary Education Commission (1952-1953) মুদালিয়ার কমিশন (1952-53), মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন...