Monday, 31 May 2021

থর্নডাইকের মতে শিখনের সূত্র গুলি কয় প্রকার ও কি কি ? থর্নডাইকের শিখনের সূত্র শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ। Laws of learning : Thorndike. Educational implications of Thorndike's Theory of learning.

 Laws of Learning : Thorndike 

শিখনের সূত্রাবলী : থর্নডাইক 


মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক তার শিখন কৌশল এর পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে কতগুলি সূত্র আবিষ্কার করেছেন । তাদেরকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয় । যথা : 

A.  প্রধান সূত্র বা মুখ্য সূত্র।

B.  অপ্রধান সূত্র বা গৌণ সূত্র । 

 

 থর্নডাইকের শিখনের সূত্রাবলী 

শিখন সম্পর্কিত থর্নডাইকের মুখ্য বা প্রধান সূত্রাবলী 


থর্নডাইকের শিখন সংক্রান্ত প্রধান সূত্র বা মুখ্য সূত্রগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা - 
1. প্রস্তুতির সূত্র (Law of Preparation). 
2. অনুশীলনের সূত্র (Law of Experience). 
3. ফললাভের সূত্র (Law of Effect). 

                      নিম্নে এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হল - 

1. প্রস্তুতির সূত্র (Law of Preparation) :

থর্নডাইকের প্রস্তুতির সূত্রে বলা হয়েছে, "প্রাণী যখন উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ তৈরি করার জন্য প্রস্তুত হয়, তখন সংযোগ ঘটালেন সে তৃপ্ত হয় এবং না ঘটলে বিরক্ত হয়। অন্যদিকে, যখন সংযোগ তৈরীর জন্য প্রস্তুত নয়, তখন সংযোগ ঘটলে সে বিরক্ত হয়।" 
2. অনুশীলনের সূত্র (Law of Experience) : 

                                         থর্নডাইকের  অনুশীলনের সূত্র দুটি অংশ। যথা - 
      i. ব্যবহারের সূত্র (Law of Use) : 

অন্য সব অবস্থা ঠিক রেখে একই উদ্দীপক এবং একই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে যদি বারবার সংযোগ করা হয় , অর্থাৎ অনুশীলন করা হয় , তাহলে সংযোগটি দৃঢ় হয়, এটি ব্যবহারের সূত্র(Law of Use)। 

      ii. অব্যবহারের সূত্র (Law of Disuse) : 

যদি বহুদিন একই উদ্দীপক এবং প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন না হয়, অর্থাৎ যদি অনুশীলন বন্ধ হয়ে যায় , তবে সংযোগ শিথিল হবে বা দুর্বল হয়ে পড়ে, এটাই থর্নডাইকের  অব্যবহারের সূত্র (Law of Disuse) । 

 3. ফললাভের সূত্র (Law of Effect) :

থর্নডাইকের ফললাভের সূত্রে বলা হয়েছে , একটি উদ্দীপক ও তার প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংশোধনযোগ্য সংযোগ স্থাপিত হলে, সেই সংযোগের ফলে যদি প্রানীর কাছে তৃপ্তিদায়ক হয় , তবে সেই সংযোগ শক্তিশালী হয় , আর যদি সংযোগকারী প্রাণীর কাছে বিরক্তিকর হয় তবে সেই সুযোগ দুর্বল হয়ে পড়ে , এটাই ফললাভের সূত্র (Law of Effect)। 

B.  অপ্রধান সূত্র বা গৌণ সূত্র :

                    শিখন সম্পর্কিত থর্নডাইকের অপ্রধান বা গৌণ সূত্র গুলি হল - 

1. বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সূত্র :   

উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের পূর্বে প্রাণী বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া বা প্রচেষ্টা করে থাকে । এর মধ্যে থেকে নির্ভুল প্রতিক্রিয়াকে বেছে নেওয়াই হল শিখন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া করার ক্ষমতা যার যত বেশি হবে ততই তার শিখনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। 

2. মানসিক অবস্থার সূত্র :

 শিখনের জন্য চাই মানসিক প্রস্তুতি । অর্থাৎ যেকোন কাজ করার ক্ষেত্রে চাই  ইতিবাচক মানসিক অবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন। 

3. আংশিক প্রতিক্রিয়ার সূত্র : 

শিখনের জন্য সামগ্রিক অবস্থা বা সমগ্র অংশকে ছোটো ছোটো অংশে বিভক্ত করে, প্রতিটি অংশের প্রতি বিশেষ প্রতিক্রিয়া করেই শিখন প্রক্রিয়া সম্ভব হয় । 
4. সাদৃশ্যের সূত্র : 

নতুন কোনো অবস্থার সম্মুখীন হলে আমরা পূর্বের কোনো অবস্থার সঙ্গে নতুন অবস্থার মিল খুঁজে বের করার চেষ্টা করি, অর্থাৎ সাদৃশ্য খোঁজার চেষ্টা করি এবং সেই ভাবেই প্রতিক্রিয়া করি। 
5. অনুষঙ্গমূলক সঞ্চালনের নীতি : 

মূল উদ্দীপক যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে , মূল উদ্দীপকের সঙ্গে যুক্ত গৌণ উদ্দীপকগুলিও সেই একই প্রতিক্রিয়া ঘটায়।
যেমন : তেতুঁল খেলে জিভে জল আসে, পরবর্তীতে তেতুঁল দেখলেই জিভে জল চলে আসে। 

EDUCATIONAL IMPLICATIONS OF THORNDIKE'S THEORY OF LEARNING 
থর্নডাইকের শিখন সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য 

শিক্ষাক্ষেত্রের থর্নডাইকের সূত্রগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নিম্নে থর্নডাইকের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য উল্লেখ করা হল - 
A. প্রস্তুতির সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. দৈহিক প্রতিক্রিয়ার জন্য যে প্রস্তুতির প্রয়োজন , সেটি পুরোপুরি পরিণমনের ওপর নির্ভর করে। 
ii. শিক্ষক/শিক্ষিকা পড়ানোর আগে শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দেবেন। 
iii. শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক পরিণমন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে শিক্ষক মহাশয় শিক্ষাদান করবেন।
B. অনুশীলনের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

    i. শিক্ষার্থীদের প্রচুর সুযোগ দিতে হবে যাতে তারা অর্জিত জ্ঞানকে পুনরাবৃত্তি করতে পারে ।
  ii. পুরনো বিষয় বারবার অনুশীলন বা প্র্যাকটিস করতে হবে নইলে শিখন দুর্বল হয়ে পড়বে।
  iii. বর্ণমালা , নামতা , সূত্র ইত্যাদি শিখনের সময় অনুশীলনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। 
  iv. নিম্নশ্রেণির গুলিতে অনুশীলন সূত্রের ওপর ব্যাপকভাবে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
C. ফল লাভের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

   i. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ পদ্ধতি অবশ্যই শিক্ষার্থীর কাছে সুখকর ও তৃপ্তিদায়ক হতে হবে।
  ii. শ্রেণি শিক্ষন শিক্ষার্থীর কাছে অবশ্যই বোধগম্য এবং তৃপ্তিদায়ক হবে। 
  iii. পাঠ্য বিষয় যেন শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। 
  iv. শ্রেণিকক্ষের পাঠ্য বিষয়বস্তু অবশ্যই শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিল রেখে অর্থাৎ বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে হবে, তবেই শিখন প্রক্রিয়া অর্থপূর্ণ হয় এবং শিখন সুখদায়ক হয়। 
  v. শিখন প্রক্রিয়া অবশ্যই সবথেকে কঠিন এর নিয়ম অনুসারে হবে।
D. বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 
i. শিক্ষার্থী যাতে বহুমুখী চিন্তা করতে পারে সে ব্যাপারে শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্য করা উচিত। 
ii. শিক্ষার্থীকে বহুমুখী চিন্তনের ও ভুল প্রচেষ্টার সুযোগ দিতে হবে। 
E. মানসিক অবস্থার সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. শিক্ষক/শিক্ষিকাদের সহযোগিতা শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষের প্রতি ধনাত্মক মনোভাব এবং উপযুক্ত মানসিক অবস্থার সৃষ্টিতে সাহায্য করে। 
ii. প্রাক্ষোভিক নিরাপত্তা শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থাকে উপযুক্তভাবে তৈরি করে । 
F. আংশিক প্রতিক্রিয়া সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 
 কোন বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কি সংক্ষেপে ছোট ছোট অংশের এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি শিক্ষার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করানো উচিত তাহলে শিখন প্রক্রিয়া সহজ হবে। 
G. সাদৃশ্যের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. শিক্ষার্থী যখন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে তখন শিক্ষকের উচিত পুরাতন বিষয়গুলি সম্পর্কে সাদৃশ্য খুঁজে বের করা এবং শিক্ষার্থীদের তা দেখানো।
ii. শিক্ষার্থীকে জানা থেকে অজানা জ্নের দিকে নিয়ে যেতে হবে ।
iii. শিক্ষার্থীর জীবনের সঙ্গে পাঠ্যবিষয়ের কোন অবস্থার যদি মিল থাকে , তবে অবশ্যই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচিত সেটিকে ব্যাখ্যা করা। 
I. অনুষঙ্গমূলক সঞ্চালন সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. শিশুরা যে সমস্ত অভ্যাস , মনোভাব , আগ্রহ ইত্যাদি অর্জন করে সেগুলো যেন তারা বড় হয়ে প্রয়োগ করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে । 
ii. শিক্ষক-শিক্ষিকার দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীদের এমন অভ্যাস বা মনোভাব গঠনে সাহায্য করা যা তারা ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে পারবে। 
           সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি যে, শিক্ষাক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইকের শিখনের সূত্র গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষার্থীর শিখনে গুরুত্বপূর্ণ। শিখন এর উপযুক্ত সূত্রগুলি দ্বারা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হবে এবং শিক্ষার্থী পাঠ্য বিষয়বস্তু কে শিক্ষার্থীর বোধগম্যতার স্তরে পৌঁছাতে সাহায্য করা।


উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান(Education) - প্রথম অধ্যায় - শিখন - SAQ Questions and Answers

 উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান(Education)

 প্রথম অধ্যায় - শিখন  

SAQ Questions and Answers 

প্রতিটি প্রশ্নের মান - 1 


1. শিখন (Learning) কাকে বলে ? 

উত্তর : যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা অতীত অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের প্রভাবে আচরন ধারার পরিবর্তন হয়,তাকেই শিখন (Learning) বলে।

2. শিখনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো ।

উত্তর : A. শিখনের ফলে ব্যাক্তির আচরণের পরিবর্তন ঘটে । 

B. শিখন অনুশীলন সাপেক্ষ ও প্রশিক্ষণলব্ধ প্রক্রিয়া । 

3. শিখনের যেকোনো দুটি উপাদানের নাম লেখো।

উত্তর : পরিনমণ ও প্রেষণা । 

4. পরিণমন (Maturation) কি ? 

উত্তর : যে জৈবিক প্রক্রিয়ার দ্বারা ব্যাক্তির সহজাত সম্ভাবনাগুলির স্বাভাবিক বিকাশের ফলে ব্যাক্তির গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তন ঘটে , তাকেই পরিনমন(Maturation) বলে ।

5. পরিণমনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো ।

উত্তর : A. পরিণমন সহজাত ও সর্বজনীন প্রক্রিয়া।

  B. পরিণমন জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া।

6. প্রেষণা (Motivation) কি ? 

ব্যাক্তির বিভিন্ন ধরনের চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য যে পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া তার আচরন ধারাকে সতত নিয়ন্ত্রণ করে ও লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে তাকেই প্রেষণা (Motivation) বলে । 

7. প্রেষণার স্তর/ধাপ গুলি কি কি ? 

উত্তর : A. অভাববোধ বা চাহিদা B. তাড়না , C. সহায়ক আচরন , D. লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ।

8. স্মৃতি কি ? 

উত্তর : যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা অতীতে শেখা বিষয়বস্তু মনে রাখা এবং প্রয়োজনমতো তা স্মরণ করাকেই স্মৃতি বলা হয়।

9. স্মৃতির কয়টি স্তর এবং কি কি ? 

উত্তর : স্মৃতির চারটি স্তর । যথা - 1. অভিজ্ঞতা অর্জন 2.  সংরক্ষণ বা ধারণ  3. পুনরুদ্রেক 4.  প্রত্যাভিজ্ঞা ।

10. " পুনরুদ্রেক" শব্দের অর্থ কি ?

উত্তর : "পুনরুদ্রেক" শব্দের অর্থ হল "মনে করা"। 

11. "প্রত্যাভিজ্ঞা" শব্দের অর্থ কি ? 

উত্তর : "প্রত্যাভিজ্ঞা" শব্দের অর্থ হল "চিনে নেওয়া" । 

12. প্রেষণার একটি বৈশিষ্ট্য লেখ ।

উত্তর : প্রেষণার একটি বৈশিষ্ট্য হলো প্রেষণা একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির উদ্দেশ্যমুখী আচরণের পরিবর্তন ঘটায় । 

13. মনোযোগ (Attention) কাকে বলে ?

উত্তর : যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা বহু উদ্দীপকের মধ্যে থেকে বিশেষ একটি উদ্দীপককে নির্বাচন করা হয় তাকেই মনোযোগ বলে অর্থাৎ মনোযোগ হল এক নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া । 

14. মনোযোগ কয় প্রকার ও কি কি ? 

উত্তর : মনোযোগ দুই প্রকার ।

        যথা - A. ইচ্ছা নিরপেক্ষ মনোযোগ 

                 B. ইচ্ছা প্রণোদিত মনোযোগ । 

15. মনোযোগের নির্ধারক বলতে কী বোঝায় ? 

উত্তর : যেসব শর্তের দ্বারা আমরা কোন বস্তু কিংবা কোনো উদ্দীপক নির্বাচন করতে পারি তাকে মনোযোগের নির্ধারক বলে।

16. মনোযোগের নির্ধারক বা শর্ত গুলি কয় প্রকার ? কি কি ?

উত্তর : মনোযোগের নির্ধারক বা শর্ত গুলি সাধারণত তিন প্রকার।

   যথা - A. বস্তুগত নির্ধারক 

             B. ব্যক্তিগত নির্ধারক এবং 

             C. শারীরিক বা দৈহিক নির্ধারক বা শর্ত।

17. মনোযোগ এর দুটি বস্তুগত নির্ধারকের নাম লেখ।

উত্তর : রং , বিস্তৃতি , তীব্রতা ইত্যাদি।

18. মনোযোগের দুটি ব্যক্তিগত নির্ধারক এর নাম লেখ।

 উত্তর : মেজাজও তীব্রতা ।

19. দ্বি - উপাদান তত্ত্বের (TWO FACTORS THEORY) প্রবক্তা কে ? 

উত্তর : ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যান । 

20. মনোবিজ্ঞানী স্পিয়ারম্যান প্রদত্ত উপাদান দুটি কি কি ? 

উত্তর :           1. "সাধারণ মানসিক ক্ষমতা" বা "G - উপাদান", 

                         2. "বিশেষ মানসিক ক্ষমতা" বা "S - উপাদান" ।

21. স্পিয়ারম্যানের দ্বি উপাদান তত্ত্বটি কত সালে প্রকাশিত হয় ? 

উত্তর : 1904 সালে প্রকাশিত হয়। 

22. স্পিয়ারম্যানের দ্বি উপাদান তত্ত্বটি প্রথম কোথায় কি নামে প্রকাশিত হয় ? 

উত্তর : স্পিয়ারম্যানের দ্বি উপাদান তত্ত্বটি "AMERICAN JOURNAL      OF     PSYCHOLOGY - তে, "GENERAL INTELLIGENCE OBJECTIVELY DETERMINED AND MEASURED" - নামে একটি প্রবন্ধে প্রকাশিত হয় ।

23. সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা G উপাদানের একটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: সাধারণ মানুষের ক্ষমতা হল সহজাত এবং সর্বজনীন।

24. বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা S উপাদানের একটি বৈশিষ্ট্য লেখ । 

উত্তর : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা সংখ্যায় অনেক এবং অনুশীলন সাপেক্ষ ।

25. সহগতি (CORRELATION) বলতে কী বোঝায় ? 

উত্তর: রাশি বিজ্ঞানের ভাষায় দুটি চলকের পারস্পরিক সম্পর্কের প্রকৃতি নির্ধারণ এবং সংক্ষিপ্ত আকারে তার প্রকাশকে সহগতি বলে । 

26. সহগতি কয় প্রকার ও কি কি ? 

উত্তর : সহগতি তিন প্রকার। যথা - 

      A. ধনাত্মক সহগতি (Positive Correlation).

      B.  ঋণাত্মক সহগতি (Negative Correlation).

      C. শূন্য সহগতি ( Zero Correlation ).

27.  সহগতির সহগাঙ্ক কাকে বলে ? 

উত্তর : রাশিবিজ্ঞানে সহগতির পরিমাপ করার জন্য যে পদ্ধতি তা-ই হল সহগতির সহগাঙ্ক । 

28. "বহু উপাদান তত্ত্ব" বা "দলগত উপাদান তত্ত্ব" -এর প্রবক্তা কে ? 

উত্তর : বহু উপাদান তত্ত্ব বা দলগত উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন আমেরিকান         মনোবিজ্ঞানী থার্সটন ।

29. "তরল বুদ্ধি" ও "কেলাসিত বুদ্ধি" - এর কথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : বিজ্ঞানী ক্যাটেল "তরল বুদ্ধি" ও "কেলাসিত বুদ্ধি" - এর কথা বলেছেন। 

30. "C - বুদ্ধি" - এর কথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী ভার্ণন "C - বুদ্ধি" - এর কথা বলেছেন ।

31. মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক কি কি বুদ্ধির কথা বলেছেন ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক তিন প্রকার বুদ্ধির কথা বলেছেন।

            যথা - a. মূর্ত বুদ্ধি , b. বিমূর্ত বুদ্ধি , c. সামাজিক বুদ্ধি । 

32. "কেলাসিত বুদ্ধি" এর কথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী ক্যাটেল কেলাসিত বুদ্ধির কথা বলেছেন।

33. বুদ্ধি কাকে বলে ?

উত্তর : "The Capacity to Acquire and Apply Knowledge" অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন ও প্রয়োগ করার ক্ষমতাই হল বুদ্ধি । 

34. বুদ্ধাংক কি ? 

উত্তর : বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে শিক্ষার্থীর সাধারণ বয়স ও মানসিক বয়সের অনুপাত পরিমাপের পদ্ধতি হল বুদ্ধাঙ্ক ।

35. বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য লেখ ।

উত্তর : বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য হল - শিশুর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তার বুদ্ধির বিকাশ ঘটে । 

36. মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েডের মতে মনের কয়টি স্তর এবং কি কি ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েডের মতে মনের তিনটি স্তর । যথা - 

                   a. চেতন মন , 

                    b. প্রাকচেতন মন , 

                      c. অবচেতন মন । 

37. আগ্রহের একটি বৈশিষ্ট্য লেখ । 

উত্তর : আগ্রহ মূলত চাহিদা ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল এবং আগ্রহ শিশু বা ব্যক্তির বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বিকাশ ঘটে যা আগ্রহের একটি বৈশিষ্ট্য। 

38. "The Nature of Intelligence"  বইটির রচয়িতা কে ? 

উত্তর : "The Nature of Intelligence"  বইটির রচয়িতা হলেন মনোবিজ্ঞানী থার্সটন ।

39. "Abilities of Man" বইটির লেখক কে ? 

উত্তর :  "Abilities of Man" বইটির লেখক হলেন মনোবিজ্ঞানী স্পিয়ারম্যান ।

40. "Theory of Intelligence" বইটির লেখক কে ? 

উত্তর : "Theory of Intelligence" বইটির লেখক হলেন মনোবিজ্ঞানী গার্ডনার । 


Sunday, 30 May 2021

প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কাকে বলে ? প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের পরীক্ষা ও বৈশিষ্ট্য এবং শিক্ষাগত তাৎপর্য আলোচনা করো । What is Trial and Error Learning ?nature of trial and error learning.

Trial and Error Learning 
প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন 


প্রাণী যখন কোন সমস্যার সম্মুখীন হয় তখন তার মধ্যে নিজের প্রচেষ্টায় ভুল বা অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া গুলি বর্জন করার এবং প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া গুলি আয়ত্তকরনের যে প্রচেষ্টা দেখা যায় তা-ই হলো "প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন"(Trial and Error Learning) । 

        প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন আমেরিকান মনোবিজ্ঞানীর ই. এল. থর্নডাইক। 

প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন সম্পর্কিত থর্নডাইকের পরীক্ষা 


প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন সম্পর্কে থর্নডাইক কুকুর , বিড়াল , মানুষ প্রভৃতির ওপর পরীক্ষা করেছিলেন তবে ক্ষুধার্ত বিড়ালের উপর তার পরীক্ষাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

           মনোবিদ থর্নডাইক একটি ক্ষুধার্ত বিড়ালকে খাঁচার মধ্যে রেখে খাঁচাটি বন্ধ করে দিলেন এবং খাঁচার বাইরে এক টুকরো খাদ্যবস্তু ( মাছ ) রেখে দিলেন । বিড়ালটি খাঁচা থেকে বেরিয়ে খাদ্যবস্তু পাওয়ার জন্য বারবার এলোমেলোভাবে প্রচেষ্টা করতে লাগলো। এই অবস্থায় তিনি খাঁচার ভেতরের বিড়ালের আচরণের বিশেষ বৈশিষ্ট্য গুলি লক্ষ্য করলেন। এখানে যে বাক্সটি বা খাঁচাটি বা যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে তাকে  "পাজল বক্স" বলে ।


থনডাইকের পরীক্ষার চিত্র : পাজল বক্স 

               প্রথম পর্যায়ে থর্নডাইক দেখলেন বিড়ালটি বেশ কিছুক্ষণ লক্ষ্যবস্তুটিকে পাওয়ার জন্য উদ্দেশ্যহীনভাবে খাঁচা থেকে বেরোনোর প্রচেষ্টা করতে করতে খাঁচার ছিটকানিটা বিড়ালের পা পড়ে যায় এবং খাঁচার ছিটকিনি খুলে যায় । ছিটকিনি খুলে যাওয়া মাত্রই বিড়ালটি বাইরে এসে খাদ্যবস্তু পেতে সমর্থ হল ।

             দ্বিতীয় পর্যায়ে বিড়ালটিকে একইভাবে খাঁচায় বন্ধ করে খাঁচার বাইরে খাবার দিয়ে রাখেন । তখনই দেখা গেল বিড়ালটি খাঁচার মধ্যে থেকে বেরিয়ে খাদ্যবস্তু পাওয়ার জন্য পরবর্তী অবস্থার তুলনায় কম ইতস্তত লাফালাফি ছোটাছুটি করতে করতে হঠাৎ তার পা ছিটকিনি তে পড়ে যাওয়াই ছিটকিনি খুলে যায় এবং বাইরে এসে খাদ্যবস্তু লাভ করে। এখানে উল্লেখ্য যে , দ্বিতীয় অবস্থায় বিড়ালটি ভুলের প্রচেষ্টা প্রথম অবস্থা থেকে অনেক কম করেছে।

          তৃতীয় পর্যায়ে আবার যখন পরীক্ষাটি পুনরাবৃত্তি করা হলো দেখা গেল বিড়ালটি একটিও ভুল প্রচেষ্টা না করে অল্প সময়ে সঠিক প্রচেষ্টা দ্বারা খাঁচা থেকে বেরিয়ে খাদ্যবস্তু পেতে সমর্থ হল। দেখা গেল এক্ষেত্রে বিড়ালটি একটিও ভুল প্রচেষ্টা না করে খাঁচা থেকে বেরিয়ে এলো, এইভাবে প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে প্রানীর শিখন ঘটে। 


  প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের : টাইম কার্ভ 


            প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের এই পরীক্ষাতে মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক ভুল ও সঠিক প্রচেষ্টা পরিমাপের জন্য যে লেখচিত্র বা গ্রাফ ব্যবহার করেছেন তাকেই "টাইম কার্ভ" বা "সময় লেখচিত্র" বলে।   

থর্নডাইকের পরীক্ষায় প্রাপ্ত শিখন প্রক্রিয়ার স্তর : 
থর্নডাইকের পরীক্ষার ফলাফল গুলি বিশ্লেষণ করলে শিখন প্রক্রিয়ার সব কটি স্তর পাওয়া যায় ।
 এগুলি হল - 
 1. তাড়না , 
 2. লক্ষ্য , 
 3. বাধা , 
 4. উদ্দেশ্যহীন প্রচেষ্টা , 
 5. হঠাৎ সাফল্য , 
6. সঠিক পদ্ধতি নির্বাচন , 
 7. সঠিক পদ্ধতি স্থিরীকরণ বা শিখন ।

Nature characteristics of trial and error learning    
প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে শিখনের বৈশিষ্ট্য 


থর্নডাইকের মতের প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন হল একটি যান্ত্রিক অনুশীলন নির্ভর প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার ফলে প্রাণের প্রচেষ্টা গুলির মধ্যে থেকে ভুল প্রচেষ্টাগুলো ক্রমশ হ্রাস পায় এবং সঠিক প্রচেষ্টাটি ক্রমশ নির্দিষ্ট হয়। এইভাবে যে শিখন হয় তাকেই "প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল বলে" । এই পদ্ধতিটি বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্য গুলি পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল - 

1. শিক্ষার্থীদের সক্রিয়তা এবং চাহিদার ওপর নির্ভরশীলতা : এই শিখন পদ্ধতিটি শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার ওপর নির্ভর করে আর শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার জন্য প্রয়োজন হয় অভাববোধ বা চাহিদা। শিক্ষার্থীর চাহিদা বা অভাববোধ না থাকলে এই শিখন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয় । ঠিক যেমন - থর্নডাইকের পরীক্ষাটিতে যদি বিড়ালটি ক্ষুধার্ত না হতো তাহলে খাদ্যের জন্য বাইরে আসছে সক্রিয় হতো না।

2. লক্ষ্য সম্পর্কে ধারণা : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল লক্ষ্য সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। 

3. যান্ত্রিকতা : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হল যান্ত্রিকতা। শিক্ষার্থীর যান্ত্রিক উপায়ে ভুল প্রচেষ্টাগুলো বাতিল করে এবং সঠিক প্রক্রিয়া গুলি বা প্রচেষ্টাগুলি নির্দিষ্ট করে।

4. পুনরাবৃত্তি: থর্নডাইকের মতে, উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে যথাযথ সংযোগ স্থাপনই হল শিখন। তাই এই প্রক্রিয়ায় উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে বারবার সংযোগ ঘটিয়ে উপযুক্ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয় যা প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের বৈশিষ্ট্য।

5. ক্রমহ্রাস : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, ভুল প্রচেষ্টা গুলি ক্রমশ হ্রাস পায় অর্থাৎ প্রচেষ্টা সংখ্যা এবং সময় ক্রমশ হ্রাস পায়।

6. বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল এর সময় প্রাণী একই পরিস্থিতিতে নানারকমের প্রতিক্রিয়া করে এবং শিখন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় যা প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল এর বৈশিষ্ট্য।

7.  প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা : এই প্রকার শিখনের প্রাণীর শিক্ষার্থীর মানসিক ও দৈহিক দিক থেকে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়।

8. সর্বজনীনতা : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল এর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল , সর্বজনীনতা। অর্থাৎ মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণী বিভিন্ন সমস্যামূলক এবং জটিল পরিস্থিতিতে প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের সাহায্য নেয়।

9. জানা থেকে অজানা : এই শিখন কৌশল এর সাহায্যে শিক্ষার্থীর ক্রমশ জানা থেকে অজানা দিকে অগ্রসর হয় এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে।
   

Educational Implications of Trial and Error Learning 
প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন এর শিক্ষাগত তাৎপর্য বা গুরুত্ব 


মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইকের প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন শিক্ষা জগতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন তত্ত্বের শিক্ষাগত তাৎপর্য নিম্নে আলোচনা করা হল - 

1. শিক্ষকের দায়িত্ব বৃদ্ধি : শিক্ষক মহাশয় শিক্ষার্থীদের ভুল প্রচেষ্টাগুলি দেখিয়ে দেবেন এবং শিক্ষার্থীরা নিজের প্রচেষ্টায় সঠিক প্রচেষ্টাগুলো আয়ত্ত করবে যা শিক্ষাক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। 

2. শিক্ষার্থীর প্রস্তুতির উপর গুরুত্ব প্রদান : এই শিখন কৌশলের সাহায্যে বোঝা যায় শিখনের সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষার্থীর মানসিক, দৈহিক, প্রাক্ষোভিক প্রস্তুতির উপর। শিক্ষার্থীর যদি কোনরকম ভাবে প্রস্তুত না থাকে তাহলে শিখন প্রক্রিয়া সম্ভব নয় যা , এই শিখন প্রক্রিয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক।

3. পাঠ্য বিষয় কে আনন্দদায়ক করে তোলা : শিক্ষার্থীর পাঠ্যবিষয় যত বেশী আনন্দদায়ক হবে শিখন প্রক্রিয়া তত সহজ হবে । শিক্ষার্থীর পাঠ্যবিষয় কে এমন ভাবে উপস্থাপিত করতে হবে যার ফলে শিক্ষার্থীরা বিরক্তিবোধ না হয়ে নিজের থেকেই শেখার তাগিদ অনুভব করে এবং শিক্ষার্থীরা ভুল প্রচেষ্টাগুলো বাদ দিয়ে সঠিক প্রচেষ্টা আয়ত্ত করতে পারে।

4. বারবার অনুশীলন : শিখন প্রক্রিয়া অনুশীলনের উপর নির্ভরশীল। শিক্ষার্থীরা যত বেশি অনুশীলন করবে তত বেশি সেই বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে । তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে এই অনুশীলন যেন যান্ত্রিক না হয়।

5. কর্মের মাধ্যমে শিখন : থর্নডাইকের শিখন কৌশলের কর্মের মাধ্যমে শিখনের উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

6. সহজ প্রক্রিয়া : এই শিখন কৌশল প্রক্রিয়ায় যেহেতু উন্নত মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয় না , কেবলমাত্র প্রচেষ্টা ও ভুলের সাহায্যেই এই শিখন প্রক্রিয়া ঘটে তাই শিক্ষা ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াকে প্রয়োগ করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

7. বাস্তবমুখী : এই শিখন প্রক্রিয়ার সাহায্যে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বাস্তবমুখী সমস্যার সমাধান করে এবং তা থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।

8. পূর্ব অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ : এই ধরনের শিখনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা পূর্ব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বর্তমান সমস্যার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং  সমাধান করতে পারে ।

          সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি যে, শিক্ষাক্ষেত্রে প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য শিখন প্রক্রিয়ার তুলনায় অপেক্ষাকৃত সহজ শিখন কৌশল হল প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন । যা শিক্ষার্থীর নিজের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে শেখায়। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে এই প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলকে ব্যাবহার করা হয়।








Saturday, 29 May 2021

প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো। Difference between Classical Conditioning and Operent Conditioning.

 Difference between Classical Conditioning and Operent Conditioning 

প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য 


1. প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন রাশিয়ান শরীরতত্ত্ববিদ আইভান প্যাভলভ (Ivan Pavlov)। 

        সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী বি. এফ. স্কিনার ।

2. প্যাভলভ ক্ষুধার্ত কুকুরের উপর গবেষণা করেছেন। 

       কিন্তু স্কিনার ক্ষুধার্ত ইদুরের ওপর গবেষণা করেছেন।

3. প্রাচীন অনুবর্তনে নির্দিষ্ট উদ্দীপকের উপস্থিতিতে আচরন সৃষ্টি হয়, তাই এটি হল " Type - I" বা "Respondent " বলে।

           অপরদিকে , সক্রিয় অনুবর্তনে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দীপকের উপস্থিতিতে আচরনের সৃষ্টি হয় না, তাই এটি হল "Type - II" বা অপারেন্ট

4. প্রাচীন অনুবর্তনে প্যাভলভ উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার সংযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ।

            অপরদিকে , সক্রিয় অনুবর্তনে প্রাণীর প্রতিক্রিয়ার ধারাবাহিকতার শৃঙ্খলার ওপর স্কিনার গুরুত্ব দিয়েছেন ।

5. প্রাচীন অনুবর্তনে প্রাণীর আচরন প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়।

        অপরদিকে সক্রিয় অনুবর্তনে অনুবর্তিত আচরন প্রাণীর ইচ্ছাধীন।

6. প্রাচীন অনুবর্তন প্রাণীর স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । 

          অপরদিকে, সক্রিয় অনুবর্তন প্রাণীর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । 

7. প্রাচীন অনুবর্তনে অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া সম্পুর্নভাবে প্রত্যাশামূলক ।

          অপরদিকে , সক্রিয় অনুবর্তনে প্রতিক্রিয়াগুলি সবসময় নির্দেশনামূলক।

8. প্রাচীন অনুবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে সময় ।

        অপরদিকে, সক্রিয় অনুবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রেষনা । 

9. প্রাচীন অনুবর্তনে শক্তিদায়ী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির আগেই শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থাপন করা হয়।

 যেমন : খাদ্যের প্রয়োগের দ্বারা লালক্ষরণের সৃষ্টি । 

            অপরদিকে, স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তনে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পরে শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থাপন করা হয়।

 যেমন : লিভারে/বোতাম চাপ দেওয়ার আগেই খাদ্যবস্তুর উপস্থাপন । 



          শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন ও সক্রিয় উভয় অনুবর্তনই গুরুত্ত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের শিখনের কৌশল হিসাবে এই অনুবর্তনদ্বয়ের অবদান অনস্বীকার্য । 





সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো। শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের গুরুত্ব আলোচনা করো। Nature/Characteristics of Operent Conditioning. Educational Implications of Operent Conditioning.

 Nature / Characteristics of Operent Conditioning 

সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য 

আগের প্রশ্নে আমরা সক্রিয় অনুবর্তন কাকে বলে ও সক্রিয় অনুবর্তনের পরীক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করেছি, আজ আমরা আলোচনা করবো , সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের ভূমিকা বা গুরুত্ব বা অবদান আলোচনা করবো ।সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য  - 

1. নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ : এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সংঘঠিত হয়, যা সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য।

2. প্রাণীর আচরন গঠন : সক্রিয় অনুবর্তনের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের আচরন গঠন করা হয় যা সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য ।

3. শক্তিদায়ী উদ্দীপক : এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল শক্তিদায়ী উদ্দীপকের ব্যবহার। শক্তিদায়ী উদ্দীপকের ব্যবহার না করলে এই অনুবর্তন প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যাবে।

4. প্রাণী স্বতস্ফূর্তভাবে কাজ করে : সক্রিয় অনুবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এই অনুবর্তনে শিক্ষার্থী স্বতস্ফূর্তভাবে কাজ করতে পারে  যা শিখনে বিশেষ ভাবে কার্যকরী

 5. শৃঙ্খলা : সক্রিয় অনুবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল শৃঙ্খলা । এখানে কতগুলি উদ্দীপক একত্রিত হয়ে একটি শৃঙ্খলা তৈরি করে এবং জটিল আচরন সম্পাদন করতে প্রাণী কে সাহায্য করে।

Educational Implications of Operent Conditioning 

শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের ভূমিকা/গুরুত্ব/অবদান 

বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়, যেমন - 

1. শিক্ষার্থীর সক্রিয়তা : শিশুর শিখনকে কার্যকরী করে তুলতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীদের সক্রিয় করে তুলতে সক্রিয় অনুবর্তনের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

2. পুনসংযোজন : শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় করে তুলতে পুনসংযোজন নীতির ব্যবহার করা হয়, যার ফলে শিক্ষার্থীর নতুন নতুন আচরন করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে পুরস্কৃত করে আগ্রহ সৃষ্টি করলে শিখন স্থায়ী হয়। 

3. পূর্ব প্রস্তুতি : শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের ফলে শিক্ষার্থী পূর্ব প্রস্তুতির সাহায্যে নতুন নতুন আচরন করতে পারে।

4. আকার গঠন : সক্রিয় অনুবর্তনের ফলে শিক্ষার্থী ক্রমশ সহজ থেকে জটিল অনুসারে সাজাতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের শিখনের আকার গঠন করতে পারে, যা শিশুর শিখনে  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার লেখো।Nature/Characteristics of Classical Conditioning . Educational implications of Classical Conditioning.

 Nature/Characteristics of Classical Conditioning 

প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য 

শারীরতত্ত্ববিদ আইভান প্যাভলভ (Ivan Pavlov) প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা । ( আগের প্রশ্নে আমরা  প্রাচীন অনুবর্তন কাকে বলে ? এই তত্ত্বের পরীক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করেছি ) তাই এখন আলোচনা করা হবে প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে - 

1. অনুবর্তিত উদ্দীপকের উপস্থাপন : যে উদ্দীপকটিকে অনুবর্তিত করতে হবে ,সেই উদ্দীপকটিকে স্বাভাবিক উদ্দীপকের আগে উপস্থিত করতে হবে। এই কারণে প্যাভলভের পরীক্ষায় ক্ষুধার্ত কুকুরকে খাবার দেওয়ার আগে ঘন্টার্ধ্বনী শোনানো হয়েছিল । 

2. স্বাভাবিক উদ্দীপকের কার্যকারিতা : স্বাভাবিক উদ্দীপকের শক্তি অনুবর্তিত উদ্দীপকের বেশি হয়, যা প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য।

 যেমন : কুকুরের লালাক্ষরণের ক্ষেত্রে খাদ্যবস্তু ঘণ্টাধ্বনির থেকে বেশি শক্তশালী উদ্দীপক ।

3. উদ্দীপক দুটির পর্যায়ক্রমিক উপস্থাপন : বিকল্প বা নিরপেক্ষ উদ্দীপকের রেশ থাকতে থাকতেই স্বাভাবিক উদ্দীপককে উপস্থাপন করতে হবে । সেজন্য প্যাভলভের পরীক্ষায় ঘণ্টাধ্বনির রেশ থাকতে থাকতেই খাবার দেওয়া হত । 

4. উদ্দীপক দুটির পুনরাবৃত্তি : যতক্ষণ না অনুবর্তন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হচ্ছে , ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক উদ্দীপক এবং বিকল্প উদ্দীপক দুটিকে পর্যায়ক্রমে বারবার উপস্থাপন করতে হবে, যা প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য । 

5. অপানুবর্তন : অনুবর্তন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার পর দীর্ঘ সময়ব্যাপি যদি খাদ্যবস্তু দেওয়া না হয়, তবে ক্রমশ লালাক্ষরনের পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকবে এবং একসময় তা বন্ধ হয়ে যাবে, একেই অপানুবর্তন বলে যা প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য। 

6. অনুবর্তনের স্বতস্ফূর্ত প্রত্যাবর্তন : অপানুবর্তনের পরে পুনরায় অনুবর্তন প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনতে আগের মতে পর্যায়ক্রমিকভাবে বিকল্প উদ্দীপকের রেশ থাকতে থাকতেই স্বাভাবিক উদ্দীপকের উপস্থাপন করতে হবে, এবং এর ফলে অনুবর্তনের স্বতস্ফূর্ত প্রত্যাবর্তন ঘটে । যা প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য। 

7. উদ্দীপক নির্দিষ্টকরণ : প্রাচীন অনুবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে উদ্দীপকটি অনুবর্তিত হবে তা নির্দিষ্ট করা । স্বাভাবিক উদ্দীপকের সঙ্গে যদি একাধিক গৌণ উদ্দীপক থাকে, তবে যে উদ্দীপকটি অনুবর্তিত হবে তা প্রাণী নির্দিষ্ট করে নেয়।

8. আচরন পৃথকীকরণ ও সামান্যীকরণ : অনুবর্তনের সাহায্যে শিক্ষার্থীরা আচরন পৃথকীকরণ ও সামান্যীকরণ করতে পারে যা প্রাচীন অনুবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য । 

Educational Implications of Classical Conditioning 

শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার 

শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়া শিশুর শিখন কৌশলে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে। শিশুর শিখনে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল - 

1. শিশুর ভাষাশিক্ষা : শিশু শিক্ষার্থীদের ভাষার বিকাশ ও সঠিক উচ্চারণ করার ক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো শব্দ বারবার উচ্চারণ করিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের ভাষার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। 

2 . শিশুর শিখন : শিশুর শিখনে বিশেষ করে বর্ন , শব্দ , নামতা ইত্যাদি শিখনে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। 

3. অভ্যাস গঠন : শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সু - অভ্যাস গঠনের ক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। 

4. কু - অভ্যাস দূরীকরণ : শিক্ষার্থীদের কু - অভ্যাস দূরীকরনের ক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 যেমন : বানান ভুল, অশ্লীল উচ্চারণ , মুদ্রাদোষ ইত্যাদি দূর করার ক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। 

5. প্রাক্ষভিক বিকাশ : অনুবর্তনের ফলই হল মানুষের জীবনের জটিল প্রক্ষোভ বা ভাবাবেগ। তাই শিশুর প্রাক্ষভিক বিকাশে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

6. শিক্ষকের আচরন ও অনুবর্তন : প্রাচীন অনুবর্তন প্রক্রিয়া শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক/ শিক্ষিকা উভয়েরই আচরণের পরিবর্তন ঘটে এবং শিশুর শিখন গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

          সুতরাং , উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিশুর কু - অভ্যাস দূর করে সু - অভ্যাস গঠনের ক্ষেত্রে ঠিক তেমনই  শিশুর বানান , নামতা শিখনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


স্কিনারের সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন কাকে বলে ? স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তনের পরীক্ষাটি আলোচনা করো। What is Operent Conditioning?

 Operent Conditioning : Skinner 

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন বা অপারেন্ট অনুবর্তন 


মনোবিজ্ঞনী স্কিনারের মতে, আচরন দুই প্রকার - রেসপন্ডেন্ট এবং অপারেন্ট জাতীয় । যেসব আচরণের নির্দিষ্ট উদ্দীপক আছে , যেমন : লালা নিঃসরণের জন্য খাদ্য ,চোখের সংকোচনের জন্য উজ্জ্বল আলো ইত্যাদি রেসপন্ডেন্ট জাতীয় আচরণের অন্তর্ভুক্ত । 

        আর যেসব আচরণের নির্দিষ্ট কোনো উদ্দীপক নেই , যে কোনো উদ্দীপকের সঙ্গে ওই আচরন ঘটাতে পারে তাকে অপারেন্ট জাতীয় আচরন বা অপারেন্ট অনুবর্তন (Operent Conditioning) বলে । 

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তনের পরীক্ষা 

 1935 সালে মনোবিজ্ঞানী স্কিনার "Science of Human   Behaviour" নামে একটি পুস্তক প্রকাশ করেন, সেই পুস্তকে সক্রিয় অনুবর্তনের পরীক্ষা উল্লেখ করেন , সেটি হল - 


 সক্রিয় অনুবর্তনের পরীক্ষা চিত্র   : স্কিনার বক্স


অপারেন্ট বা সক্রিয় অনুবর্তনের জন্য পরীক্ষা করতে স্কিনার নিজস্ব যন্ত্র বা পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তিনি বিশেষ একটি বাক্স ব্যবহার করেছিলেন যা "স্কিনার বক্স"(Skinner's Box) নামে পরিচিত । এই বাক্সে একটি ট্রে আছে,যার মধ্যে ইলেকট্রিক বোতামের সাহায্যে খাদ্য সরবরাহ করার ব্যবস্থা থাকে। 

         সাবজেক্ট অর্থাৎ যার ওপর পরীক্ষা করা হবে তার জন্য একটি ক্ষুধার্ত ইদুরকে নেওয়া হয়।মূল পরীক্ষার জন্য ইদূরটিকে প্রস্তুত করার উদ্দেশে ট্রে তে খাবার রাখা হয়।মনে রাখতে হবে , এখানে বোতাম টিপে ট্রে - তে খাবার অন হয় নি । পরে ইদুরটিকে বাক্সে রাখা অবস্থায় বোতাম টিপে খাদ্য আনা হয়। 

             প্রথম বারে ট্রে তে খাদ্য আনার উদ্দেশ্য ছিল ইদুরটিকে ট্রে তে খাদ্য সরবরাহের সঙ্গে পরিচিত করা এবং দ্বিতীয় বারের উদ্দেশ্য ছিল স্কিনারের পরীক্ষা সম্পর্কে পরিচিত করানো । 

             এরপরে ইদূরটিকে পুনরায় বাক্সে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ইদুরটি ট্রের দিকে ছুটে যায় খাদ্য পাওয়ার আশায় । কিন্তু না পাওয়ায় নানা রকম সঞ্চলনমূলক আচরন করতে থাকে।হঠাৎ ইদুরটি বাক্সের মধ্যে অবস্থিত বোতামটির ওপর চাপ দিয়ে ফেলে এবং খাদ্যবস্তু ট্রে তে চলে আসে। এই পরীক্ষা বেশ কয়েকবার করার পর দেখা যায়, ইদুরটিকে বাক্সে রাখা মাত্র যথাস্থানে গিয়ে বোতাম টিপে খাদ্য নিয়ে আসে । 

             এখানে বলা যায় যে, খাদ্যপ্রাপ্তি ইদুরকে প্রতিক্রিয়ার অর্থাৎ যথাস্থানে গিয়ে বোতাম চাপ দেওয়ার শক্তি বা রি - এনফর্স জোগায়, যা ইদুরটি শিখেছে। যেহেতু আচরণটি অর্থাৎ যথাস্থানে গিয়ে বোতাম চাপ দেওয়া যান্ত্রিকাবে বা ইন্সট্রুমেন্টাল পুরস্কার খাদ্যের সঙ্গে যুক্ত , তাই একে যান্ত্রিক শিখনও বলা হয়। এখানে আচরন ও শক্তিদাতা উদ্দীপক গুরুত্ত্বপূর্ণ ।

              যদি খাদ্য বা শক্তিদায়ী উদ্দীপক বারবার দেওয়া না হয়, তাহলে আচরণটি বন্ধ হয়ে যাবে। শক্তিদায়ী উদ্দীপক এখানে ফিডব্যাকের কাজ করে , যা শিখনে বিশেষ গুরুত্ত্বপূর্ণ । 


সক্রিয় অনুবর্তনের সাংগঠনিক কাঠামো : 


 

 সক্রিয় অনুবর্তনের সাংগঠনিক কাঠামো  চিত্র 


   

Thursday, 27 May 2021

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান(Education) দ্বিতীয় অধ্যায় - শিখন কৌশল (Mechanisms of Learning)

 উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান(Education) 

 দ্বিতীয় অধ্যায় 

 শিখন কৌশল 

 Mechanisms of Learning 

8 Marks 



1. অনুবর্তন ( Conditioning ) কাকে বলে ? কয় প্রকার ও কি কি ? 

2. প্রাচীন অনুবর্তন ( Classical Conditioing ) কাকে বলে ? প্রাচীন অনুবর্তনের পরীক্ষা  আলোচনা করো।

3. প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য লেখো। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তনের ব্যবহার বা গুরুত্ব আলোচনা করো। 

4. সক্রিয় অনুবর্তন ( Operant Conditioning ) কাকে বলে ? সক্রিয় অনুবর্তনের পরীক্ষা লেখো। 

5. সক্রিয় অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য লেখো। শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের ব্যবহার বা গুরুত্ব আলোচনা করো। 

6. প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো । 

7. প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল কাকে বলে ? প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের পরীক্ষা , বৈশিষ্ট্য ও শিক্ষাগত গুরুত্ব আলোচনা করো । 

8. থর্নডাইকের মতে , শিখনের সূত্রগুলি কয়প্রকর ও কি কি ? আলোচনা করো ।

9. অন্তর্দৃষ্ঠিমুলক শিখন কৌশল কাকে বলে ? এর পরীক্ষা , বৈশিষ্ট্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে এর প্রয়োগ আলোচনা করো। 


অনুবর্তন কাকে বলে ? কয়প্রকার ও কি কি ? what is Conditioning. Types of Conditioning.

 Conditioning 

 অনুবর্তন 

প্রতিটি প্রাণীই বিশেষ কিছু উদ্দীপকের সাথে সংযোগস্থাপন  করে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া করে। যেমন : ক্ষুধার্ত প্রাণীর লালাক্ষরণ , টর্চের আলো চোখে পড়লে চোখ বন্ধ করে ফেলা ইত্যাদি । এখানে স্বাভাবিক উদ্দীপক দ্বারা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটছে বা ঘটে। 

            কিন্তু , যখন কোনো স্বাভাবিক উদ্দীপক দ্বারা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটার পরিবর্তে , অন্য কোনো নিরপেক্ষ উদ্দীপক বা বস্তুর দ্বারা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটছে অর্থাৎ , নিরপেক্ষ উদ্দীপক উপস্থাপন করা মাত্রই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটছে, একেই অনুবর্তন বা  Conditioning বলে । 

   Definition of Conditioning 

   অনুবর্তনের সংজ্ঞা 

মনোবিদ ড্রেভার(Drever) এর মতে, "স্বাভাবিক উদ্দীপক ছাড়া অন্য কোনো উদ্দীপক , বস্তু বা পরিস্হিতি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটানোর অবস্থাকেই অনুবর্তন (Conditioning) বলে । 

 Types of Conditioning 

অনুবর্তনের প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ 


অনুবর্তনকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় । যথা : 

A. প্রাচীন অনুবর্তন বা আপাত অনুবর্তন বা Classical Conditioing বা "S - Type " অনুবর্তন বলে ।

B. সক্রিয় অনুবর্তন বা Operent Conditioning বা "R - Type" অনুবর্তন বলে । 


            

প্রাচীন অনুবর্তন (Classical Conditioning) কাকে বলে ? প্রাচীন অনুবর্তনের পরীক্ষা লেখো ।Definition of classical conditioning. Experiments of classical conditioning.

 Classical Conditioning 

প্রাচীন অনুবর্তন 

রাশিয়ান শারীরতত্ববিদ আইভান প্যাভলভ (Ivan Pavlov) প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা। এই তত্ত্ব শারীরবৃত্তীয় ব্যাখ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত । 

What is Classical Conditioning ?

 প্রাচীন অনুবর্তন কাকে বলে ? 

যদি কোনো স্বাভাবিক উদ্দীপকের সঙ্গে বা ঠিক পূর্বে একটি কৃত্রিম বা বিকল্প উদ্দীপক বারবার উপস্থাপন করা হয়, তবে ওই স্বাভাবিক উদ্দীপকটি কৃত্রিম উদ্দীপকের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং স্বাভাবিক উদ্দীপক যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, কৃত্রিম উদ্দীপকটিও সেই প্রতিক্রিয়া ঘটাবে । একেই প্রাচীন অনুবর্তন ( Classical Conditioning) বা "S - Type" অনুবর্তন বা " প্যাভলভীয় অনুবর্তন " বা " সাপেক্ষীকরন " বলে । 


 Experiment of Classical Conditioning : Pavlov 

 প্রাচীন অনুবর্তনের পরীক্ষা : প্যাভলভ 


 প্যাভলভের অনুবর্তন - সংক্রান্ত বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্যে কুকুরের লালাক্ষরণ সম্পর্কিত পরীক্ষাটি সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যার দ্বারা বোঝা যায় কিভাবে প্রাণীর মধ্যে অভ্যাস তৈরি করা যায়। তবে পরীক্ষাটি দেখে নেওয়া যাক - 



 কুকুরের লালাক্ষরণ সম্পর্কিত পরীক্ষার  চিত্র 

       একটি ক্ষুধার্ত কুকুরের সামনে কিছু খাবার দেওয়া হল, দেখা গেল কুকুরটির লালাক্ষরণ হচ্ছে । লালাক্ষরণ হল চোখের সামনে খাদ্যবস্তুকে দেখার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তিনি লালাক্ষরণের পরিমাণ পরিমাপেরও ব্যবস্থা করেছিলেন ।

         এরপর প্রতিদিন এই পরীক্ষামূলক পরিস্থিতিতে কুকুরের সামনে খাবার দেওয়ার আগে কুকুরটিকে সচেতন করার জন্য ঘণ্টার শব্দ শোনানো হয় । ঘণ্টার শব্দ শেষ হওয়ার আগেই খাদ্যবস্তু দেওয়া হয়। কিছুদিন এইভাবে পুনরাবৃত্তি করার পর দেখা গেল, ঘণ্টাধ্বনি শোনামাত্র কুকুরটির লালাক্ষরণ হচ্ছে । প্রকৃতপক্ষে , ঘণ্টার শব্দের সঙ্গে লালাক্ষরনের কোনো সম্পর্ক নেই।

          ঘণ্টার শব্দের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হল সজাগভাব । তাই প্রথম ঘণ্টাধ্বনি শোনামাত্র কুকুরটির মধ্যে সজাগভাব দেখা গিয়েছিল । কিন্তু পরীক্ষাটির পুনরাবৃত্তি করার ফলে ঘণ্টাধ্বনি উদ্দীপকের সঙ্গে লালাক্ষরণ যুক্ত হল। ঘণ্টাধ্বনি উদ্দীপক হিসেবে খাদ্যকে প্রতিস্থাপন করে লালাক্ষরনের প্রতিক্রিয়া ঘটাল । একেই প্যাভলভ বলেন "অনুবর্তিত আবর্তক্রিয়া" ( Conditional Reflex Action )। বর্তমানে একে "অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া" (Conditioned Response) বলা হয়।

প্রাচীন অনুবর্তন পরীক্ষাটির সাংগঠনিক কাঠামো : 

প্রাচীন অনুবর্তন পরীক্ষাটির সাংগঠনিক কাঠামোর  চিত্র

     খাদ্যবস্তু যখন লালাক্ষরন ঘটায় তখন লালাক্ষরন স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এই পরীক্ষায় যখন ঘণ্টাধ্বনি লালাক্ষরন ঘঠায় তখন লালাক্ষরন হল "অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া" এবং ঘণ্টাধ্বনি হল "অনুবর্তিত উদ্দীপক" ।




Tuesday, 25 May 2021

উচ্চমাধ্যমিক(H.S) শিক্ষাবিজ্ঞান(Education) প্রথম অধ্যায়- শিখন MCQ Questions and Answers

 প্রথম অধ্যায় 

শিখন 

Set - 1 

MCQ questions and answers 

( প্রতিটি প্রশ্নের মান - 1 ) 


1. শিখন একটি - 

A. জন্মগত 

B.স্থিতিশীল 

C. অর্জিত 

D. দ্বি - মুখী প্রক্রিয়া ।

উত্তর : অর্জিত প্রক্রিয়া ।

2." উদ্দিপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে যথাযথ সংযোগ স্থাপনই হল শিখন" - এ কথা কে বলেছেন ? 

A. ড্রেভার 

B. ম্যাকডুগাল 

C. হিলগার্ড 

D. থর্নডাইক ।

উত্তর : থর্নডাইক।

3.মনোবিদ গ্যাগনি  শিখনের কয়টি শ্রেণীর কথা বলেছেন?

A. 5 টি 

B. 6 টি 

C. 7 টি 

D. 8 টি ।

উত্তর : 8 টি 

4. গ্যাগনির মতে শিখনের প্রথম স্তরটি হল - 

A. ধারণার শিখন 

B. উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার শিখন 

C. বাচনিক শিখন 

D.  সংকেতমূলক শিখন 

উত্তর : সংকেতমূলক শিখন । 

5. " স্বকীয় ও অন্তর্জাত বৃদ্ধিই হল পরিনমণ " - এ কথা কে বলেছেন ? 

A. ম্যাকগিয়ক 

B. কলেশনিক 

C. গেসেল 

D. স্কিনার 

উত্তর : গেসেল ।

6. মনোবিদ ম্যাকডুগাল বলেছেন, _______ হল সুপ্ত মনোযোগ ।

A. প্রেষণা 

B. বুদ্ধি 

C. আগ্রহ 

D. শিখন 

উত্তর : আগ্রহ ।

7. পরিনমণ এক ধরনের -  

A. স্বাভাবিক প্রক্রিয়া 

B. আদেশ নির্ভর প্রক্রিয়া 

C. সামাজিক প্রক্রিয়া 

D. শর্তনির্ভর প্রক্রিয়া 

উত্তর : স্বাভাবিক প্রক্রিয়া 

8. শিখনের প্রথম স্তর হল - 

A. অভিজ্ঞতা অর্জন 

B. সংরক্ষণ 

C. পুনরুদ্রেক 

D. প্রত্যভিজ্ঞা  

উত্তর : অভিজ্ঞতা অর্জন ।

9. " পুনরুদ্রেক " কথাটির অর্থ হল - 

A. স্মরণ করা / মনে করা 

B. ভুলে যাওয়া 

C. আগ্রহ 

D. বুদ্ধি 

উত্তর : স্মরণ করা / মনে করা 

10. " প্রত্যভিজ্ঞা " শব্দের অর্থ হল - 

A. স্মরণ করা / মনে করা 

B. ভুলে যাওয়া 

C. চিনে নেওয়া 

D. বুদ্ধি 

উত্তর : চিনে নেওয়া ।

11. নীচের কোনটি জৈবিক প্রেষণা

A. তৃষ্ণা 

B. আত্মপ্রকাশ 

C. নিরাপত্তা 

D. ভালোবাসা 

উত্তর : তৃষ্ণা 

12. নীচের কোনটি সামাজিক প্রেষণা

A. তৃষ্ণা 

B. আত্মপ্রকাশ 

C. নিরাপত্তা 

D. ভালোবাসা 

উত্তর : নিরাপত্তা ।

13. নীচের কোনটি ব্যক্তিগত প্রেষণা

A. তৃষ্ণা 

B. আত্মপ্রকাশ 

C. নিরাপত্তা 

D. ভালোবাসা 

উত্তর : আত্মপ্রকাশ ।

14. নীচের কোনটি মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারক

A. তীব্রতা 

B. আগ্রহ 

C. প্রক্ষোভ 

D. মেজাজ 

উত্তর : তীব্রতা ।

15. নীচের কোনটি মনোযোগের ব্যক্তিগত নির্ধারক ?

A. গতিশীলতা 

B. স্থায়িত্ব 

C. সেন্টিমেন্ট 

D. নতুনত্ব 

উত্তর : সেন্টিমেন্ট ।

16. স্পিয়ারম্যানের " দ্বি - উপাদান তত্ত্ব " কত সালে প্রকাশিত হয় ? 

A. 1902 

B. 1904 

C. 1900 

D. 1906 

উত্তর : 1904 সালে ।

17. রাশিবিজ্ঞানে সহগতি কয় প্রকার ?

A. 3 

B. 4 

C. 5 

D . 6 

উত্তর : 3 প্রকার ।

18. " The Nature of Intelligence " বইটির রচয়িতা হলেন - 

A. স্পিয়ারম্যান 

B. প্যাভলভ 

C. থার্স্টোন 

D. স্কিনার 

উত্তর : থার্স্টোন ।

19. " Abilities of Man " বইটি লিখেছেন - 

A. স্পিয়ারম্যান 

B. প্যাভলভ 

C. থার্স্টোন 

D. স্কিনার 

উত্তর : স্পিয়ারম্যান । 

20. থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্বতে " স্মৃতির উপাদান " - কে সূচিত করা হয় - 

A. P দ্বারা 

B. S দ্বারা 

C. M দ্বারা 

D. V দ্বারা 

উত্তর : M দ্বারা ।

থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্ব আলোচনা করো।Thurstone's Multiple Factor Theory .

Multiple Factor Theory : Thurstone

 দলগত উপাদান তত্ত্ব : থার্স্টোন 


মনোবিজ্ঞানী স্পিয়ারম্যান বলেন, যে কোনো বৌদ্ধিক কাজে দুই ধরনের মানসিক ক্ষমতার প্রয়োজন হয়। যথা: একটি সাধারণ মানসিক উপাদান বা G উপাদান এবং অন্যটি বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা S উপাদান ।

            ঠিক তেমনই মার্কিন মনোবিজ্ঞানী L.L.Thurstone বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর তিনি বলেন , বুদ্ধি সাতটি প্রাথমিক মানসিক উপাদান দ্বারা গঠিত । এই উপাদানগুলি মৌলিক ও পরস্পর নিরপেক্ষ। এদের একত্রে  থার্স্টোনের " দলগত উপাদান তত্ত্ব " বলা হয়। এই সাতটি প্রাথমিক মানসিক উপাদানগুলি হল - 


1. সংখ্যাগত উপাদান ( N ) : দ্রুত এবং সঠিকভাবে সংখ্যা ব্যবহারের ক্ষমতা ।

2. বাচনিক উপাদান ( V ) : ভাষা বোঝা ও সঠিক সাবলীলভাবে ভাষা ব্যবহারের ক্ষমতা ।

3. স্থান - প্রত্যক্ষণের ক্ষমতা ( S ) : সঠিক স্থান সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা অর্জন ।

4. স্মৃতি ( M ) : দ্রুত মুখস্থ করা এবং প্রয়োজনমত তা মনে করা বা চেনার ক্ষমতা ।

5. যুক্তি নির্ণয়ের ক্ষমতা ( R ) : কোনো কাজের সাথে নিয়ম - নীতি বা সূত্র আবিষ্কার করা ও কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা ।

6. শব্দ ব্যবহারের ক্ষমতা ( W ) : দ্রুত এবং সঠিকভাবে উপযুক্ত শব্দ ব্যবহারের ক্ষমতা।

7. প্রত্যক্ষনের উপাদান ( P ) : দ্রুত এবং সঠিকভাবে সামগ্রিক পরিস্থিতি প্ৰত্যক্ষণের ক্ষমতা ।

            কোনো বৌদ্ধিক কাজে যত বেশি পরিমাণে প্রাথমিক মানসিক উপাদান থাকবে সেই কাজটি তত তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এক বা একাধিক মানসিক উপাদানগুলি দ্বারা কোনো কাজ সম্পন্ন করা হয় তাই একে " দলগত উপাদান তত্ত্ব " বলা হয়। 

 চিত্রসহ থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্ব ব্যাখ্যা : 

থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্ব  চিত্র


থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্বটিকে উপরের চিত্রে রূপ দেওয়া যায় - 

               ক , খ , গ তিনটি বৌদ্ধিক কাজ। 

ক কাজে প্রয়োজন হয় সংখ্যাগত উপাদান ( N ) ,  স্থান - প্রত্যক্ষণের ক্ষমতা ( S ) , প্রত্যক্ষনের উপাদান ( P )।

খ কাজে প্রয়োজন হয় বাচনিক উপাদান ( V ) , প্রত্যক্ষনের উপাদান ( P ) , যুক্তি নির্ণয়ের ক্ষমতা ( R ) , স্মৃতি ( M ) ।

গ কাজে প্রয়োজন হয় 3. স্থান - প্রত্যক্ষণের ক্ষমতা ( S ) ,  শব্দ ব্যবহারের ক্ষমতা ( W ) ।

          এখানে এই তিনটি বৌদ্ধিক কাজের মধ্যে যে কাজটিতে সব থেকে বেশি বৌদ্ধিক উপাদানের ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা ততবেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের মধ্যে ততবেশি সহ সম্পর্ক থাকবে ।

Monday, 24 May 2021

Two Factor Theory: Spearman "স্পিয়ারম্যানের দ্বি - উপাদান তত্ত্ব" আলোচনা করো।

  Two Factor Theory : Spearman 

 দ্বি - উপাদান তত্ত্ব - স্পিয়ারম্যান 


ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যান 1904 সালে সম্পূর্ণ গণিত নির্ভর মানসিক ক্ষমতার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দেন । "American Journal of Psychology"- তে General Objectively Determined and Measured" - নামে একটি প্রবন্ধে তিনি তার "দ্বি - উপাদান তত্ত্ব"টি প্রকাশ করেন ।


          এই তত্ত্বে তিনি বলেন , যে কোনো বৌদ্ধিক কাজে দুটি উপাদান কার্যকরী হয়।

 যথা: 

A. সাধারণ মানসিক উপাদান বা "G - Factor" বা General Mental Ability.

B. বিশেষ মানসিক উপাদান বা "S - Factor" বা Special Mental Ability.

      সাধারণ মানসিক উপাদান টি সব ধরনের কাজে কম বেশি প্রয়োজন হয় এবং বিশেষ উপাদান কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কাজে প্রয়োজন হয়। নিম্নে এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হল- 

A. সাধারণ মানসিক উপাদান বা "G - Factor" 

যে কোনো বৌদ্ধিক কাজ করতে গেলে যে জন্মগত , সর্বজনীন মানসিক ক্ষমতার প্রয়োজন এবং যা সমস্ত রকম কাজে প্রয়োজন তাকে "সাধারণ মানসিক উপাদান" বা "General Mental Ability" (GMA) বা G"- Factor" বা " G - উপাদান" বলে ।

Characteristics of General Mental Ability
সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা G - উপাদানের বৈশিষ্ট্য 

                     নিম্নে সাধারণ মানসিক উপাদান বা G - উপাদানের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করা হল - 

1. জন্মগত / সহজাত : সাধারণ মানসিক উপাদান জন্মগত বা সহজাত অর্থাৎ, জিনগত সূত্রে শিশু এই ক্ষমতার অধিকারী,যা G - উপাদানের বৈশিষ্ট্য।

2. সর্বজনীন : সাধারণ মানসিক উপাদান সর্বজনীন।কম - বেশি সব শিশুই জন্মগত সূত্রে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং সব রকম বৌদ্ধিক কাজ করতে সক্ষম হয়।

3. ব্যাক্তিভদে পরিবর্তনশীল : ব্যক্তিভেদে সাধারণ মানসিক ক্ষমতার পার্থক্য দেখা যায়। বেশিরভাগ ব্যাক্তিই গড় মানসিক ক্ষমতা সম্পন্ন হয়।এই ক্ষমতার কম বেশি অধিকারের জন্যই তা হয়।

4. দুই প্রকার : সাধারণ মানসিক ক্ষমতাকে মনোবিজ্ঞানীরা দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যথা: মূর্ত ও বিমূর্ত ।

5. অনুশীলন নিরপেক্ষ: সাধারণ মানসিক ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল, এই ক্ষমতা অনুশীলন নিরপেক্ষ।অর্থাৎ অনুশীলনের দ্বারা এই ক্ষমতার বৃদ্ধি করা যায় না।

6. পরিমাপযোগ্য : সাধারণ মানসিক ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল ইহা পরিমাপযোগ্য। অর্থাৎ এই ক্ষমতা বুদ্ধির অভিক্ষা দ্বারা পরিমাপ করা যায়।

7. সঞ্চালনশীল : এই ক্ষমতা যে শিশুর মধ্যে যত বেশি পরিমাণে থাকবে , তত বেশি এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে জ্ঞান সঞ্চালন করতে সক্ষম হবে। তাই সাধারণ মানসিক ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এই ক্ষমতা সঞ্চালনশীল ।


B. Special Mental Ability 

বিশেষ মানসিক ক্ষমতা 

সাধারণ মানসিক ক্ষমতা ছাড়াও মনোবিজ্ঞানী স্পিয়ারম্যান ব্যাক্তির দক্ষতা প্রকাশের জন্য অন্য যে উপাদানটির কথা বলেছেন , তা হল বিশেষ মানসিক উপাদান বা S - উপাদান বা Special Mental Ability (SMA)। এই বিশেষ মানসিক ক্ষমতা প্রতিটি কাজেই ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হয়।

                যেমন : সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে,গণিত শিখনে আলাদা আলাদা বিশেষ মানসিক ক্ষমতার প্রয়োজন হয়।


Characteristics of Special Mental Ability 

বিশেষ মানসিক উপাদান বা S - উপাদানের বৈশিষ্ট্য

              নিম্নে বিশেষ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল - 

1. বিশেষ ধর্মী :  নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে নির্দিষ্ট বিশেষ মানসিক ক্ষমতার প্রয়োজন হয়।এই বিশেষ ধর্মী ক্ষমতায় বিশেষ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্য।যেমন : অঙ্ক করা, ছবি আঁকা,সাইকেল চালানো সব পৃথক পৃথক বিশেষ মানসিক ক্ষমতা।

2. সংখ্যা : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা সংখ্যায় বহু বা অসংখ্য।বিভিন্ন রকম কর্মের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির মানসিক ক্ষমতার প্রয়োজন হয়।

3. সাধারণ মানসিক ক্ষমতার সহযোগী : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা এককভাবে কর্মসম্পাদন করতে পারে না। সাধারণ মানসিক ক্ষমতার সহযোগী হিসেবে কাজ করে।

4. অর্জিত : শিখনের মাধ্যমে বিশেষ মানসিক ক্ষমতা অর্জন করতে হয়।এই বিশেষ মানসিক ক্ষমতাকেই প্রবণতা বলা হয়।

5. পেশাগত সাফল্য : বিশেষ মানসিক ক্ষমতার সাহায্যে পেশাগত সাফল্য লাভ করা যায়, যা বিশেষ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্য। 

6. ব্যাক্তি একাধিক বিশেষ মানসিক ক্ষমতার অধিকারী : কোনো ব্যাক্তি একাধিক বিশেষ মানসিক ক্ষমতার অধিকারী হতে পারে। যেমন : যে ভালো ক্রিকেট খেলা করতে পারে অনেক সময় সে পড়াশোনাতেও ভালো হয়।

7. পরস্পর নিরপেক্ষ : বিশেষ মানসিক ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এই ক্ষমতা গুলি পরস্পর নিরপেক্ষ। এদের মধ্যে কোনো সহ - সম্পর্ক থাকে না বা খুবই কম।

চিত্রসহ স্পিয়ারম্যানের দ্বি - উপাদান তত্ত্বের ব্যাখ্যা 


 
   স্পিয়ারম্যানের দ্বি - উপাদান তত্ত্বের চিত্র 


উপরের চিত্রের বৃত্তটি হল সাধারণ মানসিক ক্ষমতা অর্থাৎ স্পিয়ারম্যানের  মতে , বুদ্ধির ভান্ডার। ক, খ, গ, তিনটি বৌদ্ধিক কাজ। এই তিনটি বৌদ্ধিক কাজে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা G এর প্রয়োজন যথাক্রমে G ক , G খ , G গ  পরিমাণে অর্থাৎ বিভিন্ন পরিমাণে ।কিন্তু এর গুণগত মান এক। 
                   অন্যদিকে ক , খ , গ বৌদ্ধিক কাজে যে বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োজন হয়েছে তা হল S ক, S খ , S গ । এই তিনটি বিশেষ ক্ষমতা একে অপরের থেকে পৃথক । পার্থক্য বোঝানোর জন্য তিনটি পৃথক পৃথক রং দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।





Sunday, 23 May 2021

What is Attention? Determinants/Condition of Attention?মনোযোগের শর্ত বা নির্ধারক গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।

 Attention 
 মনোযোগ 


মনোবিদ
Dumvile বলেছেন - মনোযোগ হল অন্য বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো একটি বিষয়ে চেতনাকে কেন্দ্রিভুত করা । পরিবেশের বহু বিচিত্র উদ্দীপকের মধ্যে থেকে কোনো কিছুকে নির্বাচন করে নিয়ে আমরা তাতে প্রতিক্রিয়া করি, একেই মনোযোগ বা Attention বলা হয়।


Determinants/Condition of Attention 
মনোযোগের নির্ধারক বা শর্ত 


মনোযোগ হল নির্বাচনধর্মী অর্থাৎ, অনেক উদ্দীপকের মধ্যে থেকে একটি উদ্দীপকের প্রতি আমরা মনোযোগী হয়, কিন্তু কেন আমরা মনোযোগী হয় ?
মনোযোগের নির্ধারক বা শর্তগুলি কি কি ? সে সম্পর্কে এখন আমরা আলোচনা করব।


       
মনোযোগের নির্ধারক বা শর্তগুলিকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা : 


A. বস্তুগত নির্ধারক 


B. ব্যাক্তিগত নির্ধারক 


      নিম্নে এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হল- 


A. বস্তুগত নির্ধারক :
যখন আমরা কোনো উদ্দীপকের বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ বস্তুর বৈশিষ্ট্যগুলি আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে, তখন তাকে আমরা মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারক বা শর্ত বলে থাকি। সেগুলি হল - 


1. তীব্রতা :
কিছু উদ্দীপকের তীব্রতা খুব সহজেই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে, যেমন - টর্চের আলো আমাদের চোখে পড়া মাত্রই তার প্রতি মনোযোগী হয়।


2. বিস্তৃতি :
যে উদ্দীপক বরো অথবা অনেকবেশী স্থান অধিকার করে রয়েছে, আমরা সেই বস্তুর প্রতি অধিক মনোযোগী হয়। যেমন : তোমার কোনো হতে এক টাকার কয়েন আছে আর ওপর হাতে শিক্ষাবিজ্ঞান বই রয়েছে তুমি কোনটির প্রতি মনোযোগী হবে ? 


3. পুনরাবৃত্তি :
যখন কোনো উদ্দীপক বা বস্তু একাধিকবার আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয় তাহলে খুব সহজেই আমরা তার প্রতি মনোযোগী হয়।
যেমন :
"Help" বা "সাহায্য করো" শব্দটি একবার অপেক্ষা বার বার উচ্চারিত হলে আমরা তার প্রতি মনোযোগী হয়।


4. অভিনবত্ব :
নতুনত্ব বা অভিনব কোনো বস্তুর প্রতি আমরা খুব সহজেই মনোযোগী হই , যা  মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারক বা শর্ত । যেমন : নতুন ধরনের পোশাক পরিহিত ব্যাক্তির প্রতি মনোযোগী হওয়া।


5. গতিশীলতা :
উদ্দীপকের গতিশীলতা মনোযোগের  বস্তুগত নির্ধারক বা শর্ত । যেমন : রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পাশ দিয়ে খুব গতিতে একটি মোটর বাইক চলে গেলে তার প্রতি মনোযোগী হই।


6. স্পষ্টতা :
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বা সুস্পষ্ট কোনো বস্তুর প্রতি আমরা মনোযোগী হই, যা মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারক বা শর্ত । যেমন : পরিষ্কার হাতের লেখা ।


7. রং : সাদা কালো অপেক্ষা রঙিন বিষয়ের প্রতি আমরা খুব সহজেই মনোযোগী হই যা মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারক বা শর্ত । যেমন : আগে বই গুলির লেখা সাদা কালো ছিল কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য বইগুলির লেখা রঙিন করা হয়েছে।


8. বৈপরীত্য :
একই সঙ্গে দুটি বিপরীধর্মী বিষয়ের প্রতি খুব সহজেই মনোযোগী হই যা মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারক। যেমন : পাশাপাশি একটি খুব লম্বা এবং অন্যটি বেঁটে লোক একসাথে যাওয়ার সময় আমরা তাদের প্রতি মনোযোগী হই।


B. ব্যাক্তিগত নির্ধারক :
ব্যাক্তির বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে যখন আমরা কোনো উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগী হয়, তখন তাকে মনোযোগের ব্যাক্তিগত নির্ধারক বা শর্ত বলা হয়।সেগুলি হল - 


1. আগ্রহ :
ম্যাকডুগালের মতে, " আগ্রহ হল সুপ্ত মনোযোগ এবং মনোযোগ হল সক্রিয় আগ্রহ"। আগ্রহ হল মনোযোগের প্রধান ব্যাক্তিগত নির্ধারক বা শর্ত। যেমন : যার যে বিষয়ের প্রতি আগ্রহ থাকে সে সেই বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হয়, তাই কেউ টিভি তে কার্টুন ,কেউ খেলা , কেউ বা খবর দেখে ।


2. কৌতুহল :
আমাদের চারিপাশে অনেক উদ্দীপক আছে , এর মধ্যে যে বিষয়ের প্রতি আমাদের কৌতুহল সঞ্চার হয়, আমরা তার প্রতি খুব সহজেই মনোযোগী হই।যা মনোযোগের ব্যাক্তিগত নির্ধারক বা শর্ত। যেমন: "ও তোকে কি বললো রে ?"


3. সেন্টিমেন্ট :
যে বিষয় বা বস্তুকে কেন্দ্র করে আমাদের সেন্টিমেন্ট গড়ে ওঠে, আমরা তার প্রতি মনোযোগী হই।যেমন : দেশের প্রতি ভালোাবসা।


4. অভ্যাস :
মনোযোগের একটি ব্যাক্তিগত নির্ধারক বা শর্ত হল অভ্যাস অর্থাৎ অভ্যাসগত কারণে আমরা বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হই, যেমন : সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে চা খাওয়া।


5. মেজাজ :
ব্যাক্তির মেজাজ হল মনোযোগের ব্যাক্তিগত নির্ধারক বা শর্ত।কারণ , ব্যাক্তির মেজাজ ঠিক না থাকলে কোনো বস্তুর প্রতি আমরা মনোযোগী হতে পারি না।


       সুতরাং , মনোযোগের বস্তুগত ও ব্যাক্তিগত নির্ধারক বা শর্তগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যার উপর ভিত্তি করেই আমরা কোনো উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগী হয়।

মুদালিয়ার কমিশন (1952-53) Mudaliar Commission (1952-53)

 মুদালিয়ার কমিশন (1952-53) Mudaliar Commission Secondary Education Commission (1952-1953) মুদালিয়ার কমিশন (1952-53), মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন...