Wednesday, 2 June 2021

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান (EDUCATION) - তৃতীয় অধ্যায় শিক্ষায় রাশিবিজ্ঞান (EDUCATIONAL STATISTICS)

 উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান (EDUCATION)


তৃতীয় অধ্যায় 


শিক্ষায় রাশিবিজ্ঞান 

  (EDUCATIONAL STATISTICS) 

  8 MARKS 


ছোটো প্রশ্ন          MCQ       SAQ 

 

1. শিক্ষাগত রাশিবিজ্ঞান(Educational Statistics) কাকে বলে ? শিক্ষাগত রাশিবিজ্ঞানের উপযোগিতা বা ব্যবহার আলোচনা করো। 

2. কেন্দ্রীয় প্রবণতা(Central Tendency) কাকে বলে ? কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ(Measures of Central Tendency) গুলি কয়প্রকার ও কি কি ? কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব আলোচনা করো।

3. গড়(Mean) কি ? গড় ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো। 

4. মধ্যমমান(Median) কি ? মধ্যমমান ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো ।

5. ভূষিষ্টক(Mode) কি ? ভূষিষ্টকের ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো। 

6. পরিসংখ্যা বহুভুজ(Frequency Polygon) কি ? পরিসংখ্যা বহুভুজ এর সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো। 

7. আয়তলেখ(Histogram) কি ? আয়তলেখ এর সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।





Monday, 31 May 2021

থর্নডাইকের মতে শিখনের সূত্র গুলি কয় প্রকার ও কি কি ? থর্নডাইকের শিখনের সূত্র শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ। Laws of learning : Thorndike. Educational implications of Thorndike's Theory of learning.

 Laws of Learning : Thorndike 

শিখনের সূত্রাবলী : থর্নডাইক 


মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক তার শিখন কৌশল এর পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে কতগুলি সূত্র আবিষ্কার করেছেন । তাদেরকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয় । যথা : 

A.  প্রধান সূত্র বা মুখ্য সূত্র।

B.  অপ্রধান সূত্র বা গৌণ সূত্র । 

 

 থর্নডাইকের শিখনের সূত্রাবলী 

শিখন সম্পর্কিত থর্নডাইকের মুখ্য বা প্রধান সূত্রাবলী 


থর্নডাইকের শিখন সংক্রান্ত প্রধান সূত্র বা মুখ্য সূত্রগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা - 
1. প্রস্তুতির সূত্র (Law of Preparation). 
2. অনুশীলনের সূত্র (Law of Experience). 
3. ফললাভের সূত্র (Law of Effect). 

                      নিম্নে এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হল - 

1. প্রস্তুতির সূত্র (Law of Preparation) :

থর্নডাইকের প্রস্তুতির সূত্রে বলা হয়েছে, "প্রাণী যখন উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ তৈরি করার জন্য প্রস্তুত হয়, তখন সংযোগ ঘটালেন সে তৃপ্ত হয় এবং না ঘটলে বিরক্ত হয়। অন্যদিকে, যখন সংযোগ তৈরীর জন্য প্রস্তুত নয়, তখন সংযোগ ঘটলে সে বিরক্ত হয়।" 
2. অনুশীলনের সূত্র (Law of Experience) : 

                                         থর্নডাইকের  অনুশীলনের সূত্র দুটি অংশ। যথা - 
      i. ব্যবহারের সূত্র (Law of Use) : 

অন্য সব অবস্থা ঠিক রেখে একই উদ্দীপক এবং একই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে যদি বারবার সংযোগ করা হয় , অর্থাৎ অনুশীলন করা হয় , তাহলে সংযোগটি দৃঢ় হয়, এটি ব্যবহারের সূত্র(Law of Use)। 

      ii. অব্যবহারের সূত্র (Law of Disuse) : 

যদি বহুদিন একই উদ্দীপক এবং প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন না হয়, অর্থাৎ যদি অনুশীলন বন্ধ হয়ে যায় , তবে সংযোগ শিথিল হবে বা দুর্বল হয়ে পড়ে, এটাই থর্নডাইকের  অব্যবহারের সূত্র (Law of Disuse) । 

 3. ফললাভের সূত্র (Law of Effect) :

থর্নডাইকের ফললাভের সূত্রে বলা হয়েছে , একটি উদ্দীপক ও তার প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংশোধনযোগ্য সংযোগ স্থাপিত হলে, সেই সংযোগের ফলে যদি প্রানীর কাছে তৃপ্তিদায়ক হয় , তবে সেই সংযোগ শক্তিশালী হয় , আর যদি সংযোগকারী প্রাণীর কাছে বিরক্তিকর হয় তবে সেই সুযোগ দুর্বল হয়ে পড়ে , এটাই ফললাভের সূত্র (Law of Effect)। 

B.  অপ্রধান সূত্র বা গৌণ সূত্র :

                    শিখন সম্পর্কিত থর্নডাইকের অপ্রধান বা গৌণ সূত্র গুলি হল - 

1. বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সূত্র :   

উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের পূর্বে প্রাণী বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া বা প্রচেষ্টা করে থাকে । এর মধ্যে থেকে নির্ভুল প্রতিক্রিয়াকে বেছে নেওয়াই হল শিখন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া করার ক্ষমতা যার যত বেশি হবে ততই তার শিখনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। 

2. মানসিক অবস্থার সূত্র :

 শিখনের জন্য চাই মানসিক প্রস্তুতি । অর্থাৎ যেকোন কাজ করার ক্ষেত্রে চাই  ইতিবাচক মানসিক অবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন। 

3. আংশিক প্রতিক্রিয়ার সূত্র : 

শিখনের জন্য সামগ্রিক অবস্থা বা সমগ্র অংশকে ছোটো ছোটো অংশে বিভক্ত করে, প্রতিটি অংশের প্রতি বিশেষ প্রতিক্রিয়া করেই শিখন প্রক্রিয়া সম্ভব হয় । 
4. সাদৃশ্যের সূত্র : 

নতুন কোনো অবস্থার সম্মুখীন হলে আমরা পূর্বের কোনো অবস্থার সঙ্গে নতুন অবস্থার মিল খুঁজে বের করার চেষ্টা করি, অর্থাৎ সাদৃশ্য খোঁজার চেষ্টা করি এবং সেই ভাবেই প্রতিক্রিয়া করি। 
5. অনুষঙ্গমূলক সঞ্চালনের নীতি : 

মূল উদ্দীপক যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে , মূল উদ্দীপকের সঙ্গে যুক্ত গৌণ উদ্দীপকগুলিও সেই একই প্রতিক্রিয়া ঘটায়।
যেমন : তেতুঁল খেলে জিভে জল আসে, পরবর্তীতে তেতুঁল দেখলেই জিভে জল চলে আসে। 

EDUCATIONAL IMPLICATIONS OF THORNDIKE'S THEORY OF LEARNING 
থর্নডাইকের শিখন সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য 

শিক্ষাক্ষেত্রের থর্নডাইকের সূত্রগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নিম্নে থর্নডাইকের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য উল্লেখ করা হল - 
A. প্রস্তুতির সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. দৈহিক প্রতিক্রিয়ার জন্য যে প্রস্তুতির প্রয়োজন , সেটি পুরোপুরি পরিণমনের ওপর নির্ভর করে। 
ii. শিক্ষক/শিক্ষিকা পড়ানোর আগে শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দেবেন। 
iii. শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক পরিণমন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে শিক্ষক মহাশয় শিক্ষাদান করবেন।
B. অনুশীলনের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

    i. শিক্ষার্থীদের প্রচুর সুযোগ দিতে হবে যাতে তারা অর্জিত জ্ঞানকে পুনরাবৃত্তি করতে পারে ।
  ii. পুরনো বিষয় বারবার অনুশীলন বা প্র্যাকটিস করতে হবে নইলে শিখন দুর্বল হয়ে পড়বে।
  iii. বর্ণমালা , নামতা , সূত্র ইত্যাদি শিখনের সময় অনুশীলনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। 
  iv. নিম্নশ্রেণির গুলিতে অনুশীলন সূত্রের ওপর ব্যাপকভাবে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
C. ফল লাভের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

   i. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ পদ্ধতি অবশ্যই শিক্ষার্থীর কাছে সুখকর ও তৃপ্তিদায়ক হতে হবে।
  ii. শ্রেণি শিক্ষন শিক্ষার্থীর কাছে অবশ্যই বোধগম্য এবং তৃপ্তিদায়ক হবে। 
  iii. পাঠ্য বিষয় যেন শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। 
  iv. শ্রেণিকক্ষের পাঠ্য বিষয়বস্তু অবশ্যই শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিল রেখে অর্থাৎ বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে হবে, তবেই শিখন প্রক্রিয়া অর্থপূর্ণ হয় এবং শিখন সুখদায়ক হয়। 
  v. শিখন প্রক্রিয়া অবশ্যই সবথেকে কঠিন এর নিয়ম অনুসারে হবে।
D. বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 
i. শিক্ষার্থী যাতে বহুমুখী চিন্তা করতে পারে সে ব্যাপারে শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্য করা উচিত। 
ii. শিক্ষার্থীকে বহুমুখী চিন্তনের ও ভুল প্রচেষ্টার সুযোগ দিতে হবে। 
E. মানসিক অবস্থার সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. শিক্ষক/শিক্ষিকাদের সহযোগিতা শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষের প্রতি ধনাত্মক মনোভাব এবং উপযুক্ত মানসিক অবস্থার সৃষ্টিতে সাহায্য করে। 
ii. প্রাক্ষোভিক নিরাপত্তা শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থাকে উপযুক্তভাবে তৈরি করে । 
F. আংশিক প্রতিক্রিয়া সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 
 কোন বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কি সংক্ষেপে ছোট ছোট অংশের এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি শিক্ষার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করানো উচিত তাহলে শিখন প্রক্রিয়া সহজ হবে। 
G. সাদৃশ্যের সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. শিক্ষার্থী যখন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে তখন শিক্ষকের উচিত পুরাতন বিষয়গুলি সম্পর্কে সাদৃশ্য খুঁজে বের করা এবং শিক্ষার্থীদের তা দেখানো।
ii. শিক্ষার্থীকে জানা থেকে অজানা জ্নের দিকে নিয়ে যেতে হবে ।
iii. শিক্ষার্থীর জীবনের সঙ্গে পাঠ্যবিষয়ের কোন অবস্থার যদি মিল থাকে , তবে অবশ্যই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচিত সেটিকে ব্যাখ্যা করা। 
I. অনুষঙ্গমূলক সঞ্চালন সূত্রের শিক্ষাগত তাৎপর্য : 

i. শিশুরা যে সমস্ত অভ্যাস , মনোভাব , আগ্রহ ইত্যাদি অর্জন করে সেগুলো যেন তারা বড় হয়ে প্রয়োগ করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে । 
ii. শিক্ষক-শিক্ষিকার দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীদের এমন অভ্যাস বা মনোভাব গঠনে সাহায্য করা যা তারা ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে পারবে। 
           সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি যে, শিক্ষাক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইকের শিখনের সূত্র গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষার্থীর শিখনে গুরুত্বপূর্ণ। শিখন এর উপযুক্ত সূত্রগুলি দ্বারা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হবে এবং শিক্ষার্থী পাঠ্য বিষয়বস্তু কে শিক্ষার্থীর বোধগম্যতার স্তরে পৌঁছাতে সাহায্য করা।


উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান(Education) - প্রথম অধ্যায় - শিখন - SAQ Questions and Answers

 উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান(Education)

 প্রথম অধ্যায় - শিখন  

SAQ Questions and Answers 

প্রতিটি প্রশ্নের মান - 1 


1. শিখন (Learning) কাকে বলে ? 

উত্তর : যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা অতীত অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের প্রভাবে আচরন ধারার পরিবর্তন হয়,তাকেই শিখন (Learning) বলে।

2. শিখনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো ।

উত্তর : A. শিখনের ফলে ব্যাক্তির আচরণের পরিবর্তন ঘটে । 

B. শিখন অনুশীলন সাপেক্ষ ও প্রশিক্ষণলব্ধ প্রক্রিয়া । 

3. শিখনের যেকোনো দুটি উপাদানের নাম লেখো।

উত্তর : পরিনমণ ও প্রেষণা । 

4. পরিণমন (Maturation) কি ? 

উত্তর : যে জৈবিক প্রক্রিয়ার দ্বারা ব্যাক্তির সহজাত সম্ভাবনাগুলির স্বাভাবিক বিকাশের ফলে ব্যাক্তির গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তন ঘটে , তাকেই পরিনমন(Maturation) বলে ।

5. পরিণমনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো ।

উত্তর : A. পরিণমন সহজাত ও সর্বজনীন প্রক্রিয়া।

  B. পরিণমন জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া।

6. প্রেষণা (Motivation) কি ? 

ব্যাক্তির বিভিন্ন ধরনের চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য যে পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া তার আচরন ধারাকে সতত নিয়ন্ত্রণ করে ও লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে তাকেই প্রেষণা (Motivation) বলে । 

7. প্রেষণার স্তর/ধাপ গুলি কি কি ? 

উত্তর : A. অভাববোধ বা চাহিদা B. তাড়না , C. সহায়ক আচরন , D. লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ।

8. স্মৃতি কি ? 

উত্তর : যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা অতীতে শেখা বিষয়বস্তু মনে রাখা এবং প্রয়োজনমতো তা স্মরণ করাকেই স্মৃতি বলা হয়।

9. স্মৃতির কয়টি স্তর এবং কি কি ? 

উত্তর : স্মৃতির চারটি স্তর । যথা - 1. অভিজ্ঞতা অর্জন 2.  সংরক্ষণ বা ধারণ  3. পুনরুদ্রেক 4.  প্রত্যাভিজ্ঞা ।

10. " পুনরুদ্রেক" শব্দের অর্থ কি ?

উত্তর : "পুনরুদ্রেক" শব্দের অর্থ হল "মনে করা"। 

11. "প্রত্যাভিজ্ঞা" শব্দের অর্থ কি ? 

উত্তর : "প্রত্যাভিজ্ঞা" শব্দের অর্থ হল "চিনে নেওয়া" । 

12. প্রেষণার একটি বৈশিষ্ট্য লেখ ।

উত্তর : প্রেষণার একটি বৈশিষ্ট্য হলো প্রেষণা একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির উদ্দেশ্যমুখী আচরণের পরিবর্তন ঘটায় । 

13. মনোযোগ (Attention) কাকে বলে ?

উত্তর : যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা বহু উদ্দীপকের মধ্যে থেকে বিশেষ একটি উদ্দীপককে নির্বাচন করা হয় তাকেই মনোযোগ বলে অর্থাৎ মনোযোগ হল এক নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া । 

14. মনোযোগ কয় প্রকার ও কি কি ? 

উত্তর : মনোযোগ দুই প্রকার ।

        যথা - A. ইচ্ছা নিরপেক্ষ মনোযোগ 

                 B. ইচ্ছা প্রণোদিত মনোযোগ । 

15. মনোযোগের নির্ধারক বলতে কী বোঝায় ? 

উত্তর : যেসব শর্তের দ্বারা আমরা কোন বস্তু কিংবা কোনো উদ্দীপক নির্বাচন করতে পারি তাকে মনোযোগের নির্ধারক বলে।

16. মনোযোগের নির্ধারক বা শর্ত গুলি কয় প্রকার ? কি কি ?

উত্তর : মনোযোগের নির্ধারক বা শর্ত গুলি সাধারণত তিন প্রকার।

   যথা - A. বস্তুগত নির্ধারক 

             B. ব্যক্তিগত নির্ধারক এবং 

             C. শারীরিক বা দৈহিক নির্ধারক বা শর্ত।

17. মনোযোগ এর দুটি বস্তুগত নির্ধারকের নাম লেখ।

উত্তর : রং , বিস্তৃতি , তীব্রতা ইত্যাদি।

18. মনোযোগের দুটি ব্যক্তিগত নির্ধারক এর নাম লেখ।

 উত্তর : মেজাজও তীব্রতা ।

19. দ্বি - উপাদান তত্ত্বের (TWO FACTORS THEORY) প্রবক্তা কে ? 

উত্তর : ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যান । 

20. মনোবিজ্ঞানী স্পিয়ারম্যান প্রদত্ত উপাদান দুটি কি কি ? 

উত্তর :           1. "সাধারণ মানসিক ক্ষমতা" বা "G - উপাদান", 

                         2. "বিশেষ মানসিক ক্ষমতা" বা "S - উপাদান" ।

21. স্পিয়ারম্যানের দ্বি উপাদান তত্ত্বটি কত সালে প্রকাশিত হয় ? 

উত্তর : 1904 সালে প্রকাশিত হয়। 

22. স্পিয়ারম্যানের দ্বি উপাদান তত্ত্বটি প্রথম কোথায় কি নামে প্রকাশিত হয় ? 

উত্তর : স্পিয়ারম্যানের দ্বি উপাদান তত্ত্বটি "AMERICAN JOURNAL      OF     PSYCHOLOGY - তে, "GENERAL INTELLIGENCE OBJECTIVELY DETERMINED AND MEASURED" - নামে একটি প্রবন্ধে প্রকাশিত হয় ।

23. সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বা G উপাদানের একটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: সাধারণ মানুষের ক্ষমতা হল সহজাত এবং সর্বজনীন।

24. বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বা S উপাদানের একটি বৈশিষ্ট্য লেখ । 

উত্তর : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা সংখ্যায় অনেক এবং অনুশীলন সাপেক্ষ ।

25. সহগতি (CORRELATION) বলতে কী বোঝায় ? 

উত্তর: রাশি বিজ্ঞানের ভাষায় দুটি চলকের পারস্পরিক সম্পর্কের প্রকৃতি নির্ধারণ এবং সংক্ষিপ্ত আকারে তার প্রকাশকে সহগতি বলে । 

26. সহগতি কয় প্রকার ও কি কি ? 

উত্তর : সহগতি তিন প্রকার। যথা - 

      A. ধনাত্মক সহগতি (Positive Correlation).

      B.  ঋণাত্মক সহগতি (Negative Correlation).

      C. শূন্য সহগতি ( Zero Correlation ).

27.  সহগতির সহগাঙ্ক কাকে বলে ? 

উত্তর : রাশিবিজ্ঞানে সহগতির পরিমাপ করার জন্য যে পদ্ধতি তা-ই হল সহগতির সহগাঙ্ক । 

28. "বহু উপাদান তত্ত্ব" বা "দলগত উপাদান তত্ত্ব" -এর প্রবক্তা কে ? 

উত্তর : বহু উপাদান তত্ত্ব বা দলগত উপাদান তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন আমেরিকান         মনোবিজ্ঞানী থার্সটন ।

29. "তরল বুদ্ধি" ও "কেলাসিত বুদ্ধি" - এর কথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : বিজ্ঞানী ক্যাটেল "তরল বুদ্ধি" ও "কেলাসিত বুদ্ধি" - এর কথা বলেছেন। 

30. "C - বুদ্ধি" - এর কথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী ভার্ণন "C - বুদ্ধি" - এর কথা বলেছেন ।

31. মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক কি কি বুদ্ধির কথা বলেছেন ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক তিন প্রকার বুদ্ধির কথা বলেছেন।

            যথা - a. মূর্ত বুদ্ধি , b. বিমূর্ত বুদ্ধি , c. সামাজিক বুদ্ধি । 

32. "কেলাসিত বুদ্ধি" এর কথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী ক্যাটেল কেলাসিত বুদ্ধির কথা বলেছেন।

33. বুদ্ধি কাকে বলে ?

উত্তর : "The Capacity to Acquire and Apply Knowledge" অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন ও প্রয়োগ করার ক্ষমতাই হল বুদ্ধি । 

34. বুদ্ধাংক কি ? 

উত্তর : বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে শিক্ষার্থীর সাধারণ বয়স ও মানসিক বয়সের অনুপাত পরিমাপের পদ্ধতি হল বুদ্ধাঙ্ক ।

35. বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য লেখ ।

উত্তর : বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য হল - শিশুর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তার বুদ্ধির বিকাশ ঘটে । 

36. মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েডের মতে মনের কয়টি স্তর এবং কি কি ? 

উত্তর : মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েডের মতে মনের তিনটি স্তর । যথা - 

                   a. চেতন মন , 

                    b. প্রাকচেতন মন , 

                      c. অবচেতন মন । 

37. আগ্রহের একটি বৈশিষ্ট্য লেখ । 

উত্তর : আগ্রহ মূলত চাহিদা ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল এবং আগ্রহ শিশু বা ব্যক্তির বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বিকাশ ঘটে যা আগ্রহের একটি বৈশিষ্ট্য। 

38. "The Nature of Intelligence"  বইটির রচয়িতা কে ? 

উত্তর : "The Nature of Intelligence"  বইটির রচয়িতা হলেন মনোবিজ্ঞানী থার্সটন ।

39. "Abilities of Man" বইটির লেখক কে ? 

উত্তর :  "Abilities of Man" বইটির লেখক হলেন মনোবিজ্ঞানী স্পিয়ারম্যান ।

40. "Theory of Intelligence" বইটির লেখক কে ? 

উত্তর : "Theory of Intelligence" বইটির লেখক হলেন মনোবিজ্ঞানী গার্ডনার । 


Sunday, 30 May 2021

প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কাকে বলে ? প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের পরীক্ষা ও বৈশিষ্ট্য এবং শিক্ষাগত তাৎপর্য আলোচনা করো । What is Trial and Error Learning ?nature of trial and error learning.

Trial and Error Learning 
প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন 


প্রাণী যখন কোন সমস্যার সম্মুখীন হয় তখন তার মধ্যে নিজের প্রচেষ্টায় ভুল বা অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া গুলি বর্জন করার এবং প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া গুলি আয়ত্তকরনের যে প্রচেষ্টা দেখা যায় তা-ই হলো "প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন"(Trial and Error Learning) । 

        প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন আমেরিকান মনোবিজ্ঞানীর ই. এল. থর্নডাইক। 

প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন সম্পর্কিত থর্নডাইকের পরীক্ষা 


প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন সম্পর্কে থর্নডাইক কুকুর , বিড়াল , মানুষ প্রভৃতির ওপর পরীক্ষা করেছিলেন তবে ক্ষুধার্ত বিড়ালের উপর তার পরীক্ষাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

           মনোবিদ থর্নডাইক একটি ক্ষুধার্ত বিড়ালকে খাঁচার মধ্যে রেখে খাঁচাটি বন্ধ করে দিলেন এবং খাঁচার বাইরে এক টুকরো খাদ্যবস্তু ( মাছ ) রেখে দিলেন । বিড়ালটি খাঁচা থেকে বেরিয়ে খাদ্যবস্তু পাওয়ার জন্য বারবার এলোমেলোভাবে প্রচেষ্টা করতে লাগলো। এই অবস্থায় তিনি খাঁচার ভেতরের বিড়ালের আচরণের বিশেষ বৈশিষ্ট্য গুলি লক্ষ্য করলেন। এখানে যে বাক্সটি বা খাঁচাটি বা যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে তাকে  "পাজল বক্স" বলে ।


থনডাইকের পরীক্ষার চিত্র : পাজল বক্স 

               প্রথম পর্যায়ে থর্নডাইক দেখলেন বিড়ালটি বেশ কিছুক্ষণ লক্ষ্যবস্তুটিকে পাওয়ার জন্য উদ্দেশ্যহীনভাবে খাঁচা থেকে বেরোনোর প্রচেষ্টা করতে করতে খাঁচার ছিটকানিটা বিড়ালের পা পড়ে যায় এবং খাঁচার ছিটকিনি খুলে যায় । ছিটকিনি খুলে যাওয়া মাত্রই বিড়ালটি বাইরে এসে খাদ্যবস্তু পেতে সমর্থ হল ।

             দ্বিতীয় পর্যায়ে বিড়ালটিকে একইভাবে খাঁচায় বন্ধ করে খাঁচার বাইরে খাবার দিয়ে রাখেন । তখনই দেখা গেল বিড়ালটি খাঁচার মধ্যে থেকে বেরিয়ে খাদ্যবস্তু পাওয়ার জন্য পরবর্তী অবস্থার তুলনায় কম ইতস্তত লাফালাফি ছোটাছুটি করতে করতে হঠাৎ তার পা ছিটকিনি তে পড়ে যাওয়াই ছিটকিনি খুলে যায় এবং বাইরে এসে খাদ্যবস্তু লাভ করে। এখানে উল্লেখ্য যে , দ্বিতীয় অবস্থায় বিড়ালটি ভুলের প্রচেষ্টা প্রথম অবস্থা থেকে অনেক কম করেছে।

          তৃতীয় পর্যায়ে আবার যখন পরীক্ষাটি পুনরাবৃত্তি করা হলো দেখা গেল বিড়ালটি একটিও ভুল প্রচেষ্টা না করে অল্প সময়ে সঠিক প্রচেষ্টা দ্বারা খাঁচা থেকে বেরিয়ে খাদ্যবস্তু পেতে সমর্থ হল। দেখা গেল এক্ষেত্রে বিড়ালটি একটিও ভুল প্রচেষ্টা না করে খাঁচা থেকে বেরিয়ে এলো, এইভাবে প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে প্রানীর শিখন ঘটে। 


  প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের : টাইম কার্ভ 


            প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখনের এই পরীক্ষাতে মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক ভুল ও সঠিক প্রচেষ্টা পরিমাপের জন্য যে লেখচিত্র বা গ্রাফ ব্যবহার করেছেন তাকেই "টাইম কার্ভ" বা "সময় লেখচিত্র" বলে।   

থর্নডাইকের পরীক্ষায় প্রাপ্ত শিখন প্রক্রিয়ার স্তর : 
থর্নডাইকের পরীক্ষার ফলাফল গুলি বিশ্লেষণ করলে শিখন প্রক্রিয়ার সব কটি স্তর পাওয়া যায় ।
 এগুলি হল - 
 1. তাড়না , 
 2. লক্ষ্য , 
 3. বাধা , 
 4. উদ্দেশ্যহীন প্রচেষ্টা , 
 5. হঠাৎ সাফল্য , 
6. সঠিক পদ্ধতি নির্বাচন , 
 7. সঠিক পদ্ধতি স্থিরীকরণ বা শিখন ।

Nature characteristics of trial and error learning    
প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে শিখনের বৈশিষ্ট্য 


থর্নডাইকের মতের প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন হল একটি যান্ত্রিক অনুশীলন নির্ভর প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার ফলে প্রাণের প্রচেষ্টা গুলির মধ্যে থেকে ভুল প্রচেষ্টাগুলো ক্রমশ হ্রাস পায় এবং সঠিক প্রচেষ্টাটি ক্রমশ নির্দিষ্ট হয়। এইভাবে যে শিখন হয় তাকেই "প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল বলে" । এই পদ্ধতিটি বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্য গুলি পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল - 

1. শিক্ষার্থীদের সক্রিয়তা এবং চাহিদার ওপর নির্ভরশীলতা : এই শিখন পদ্ধতিটি শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার ওপর নির্ভর করে আর শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার জন্য প্রয়োজন হয় অভাববোধ বা চাহিদা। শিক্ষার্থীর চাহিদা বা অভাববোধ না থাকলে এই শিখন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয় । ঠিক যেমন - থর্নডাইকের পরীক্ষাটিতে যদি বিড়ালটি ক্ষুধার্ত না হতো তাহলে খাদ্যের জন্য বাইরে আসছে সক্রিয় হতো না।

2. লক্ষ্য সম্পর্কে ধারণা : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল লক্ষ্য সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। 

3. যান্ত্রিকতা : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হল যান্ত্রিকতা। শিক্ষার্থীর যান্ত্রিক উপায়ে ভুল প্রচেষ্টাগুলো বাতিল করে এবং সঠিক প্রক্রিয়া গুলি বা প্রচেষ্টাগুলি নির্দিষ্ট করে।

4. পুনরাবৃত্তি: থর্নডাইকের মতে, উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে যথাযথ সংযোগ স্থাপনই হল শিখন। তাই এই প্রক্রিয়ায় উদ্দীপক ও প্রক্রিয়ার মধ্যে বারবার সংযোগ ঘটিয়ে উপযুক্ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয় যা প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের বৈশিষ্ট্য।

5. ক্রমহ্রাস : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, ভুল প্রচেষ্টা গুলি ক্রমশ হ্রাস পায় অর্থাৎ প্রচেষ্টা সংখ্যা এবং সময় ক্রমশ হ্রাস পায়।

6. বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল এর সময় প্রাণী একই পরিস্থিতিতে নানারকমের প্রতিক্রিয়া করে এবং শিখন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় যা প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল এর বৈশিষ্ট্য।

7.  প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা : এই প্রকার শিখনের প্রাণীর শিক্ষার্থীর মানসিক ও দৈহিক দিক থেকে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়।

8. সর্বজনীনতা : প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল এর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল , সর্বজনীনতা। অর্থাৎ মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণী বিভিন্ন সমস্যামূলক এবং জটিল পরিস্থিতিতে প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলের সাহায্য নেয়।

9. জানা থেকে অজানা : এই শিখন কৌশল এর সাহায্যে শিক্ষার্থীর ক্রমশ জানা থেকে অজানা দিকে অগ্রসর হয় এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে।
   

Educational Implications of Trial and Error Learning 
প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন এর শিক্ষাগত তাৎপর্য বা গুরুত্ব 


মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইকের প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন শিক্ষা জগতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন তত্ত্বের শিক্ষাগত তাৎপর্য নিম্নে আলোচনা করা হল - 

1. শিক্ষকের দায়িত্ব বৃদ্ধি : শিক্ষক মহাশয় শিক্ষার্থীদের ভুল প্রচেষ্টাগুলি দেখিয়ে দেবেন এবং শিক্ষার্থীরা নিজের প্রচেষ্টায় সঠিক প্রচেষ্টাগুলো আয়ত্ত করবে যা শিক্ষাক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। 

2. শিক্ষার্থীর প্রস্তুতির উপর গুরুত্ব প্রদান : এই শিখন কৌশলের সাহায্যে বোঝা যায় শিখনের সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষার্থীর মানসিক, দৈহিক, প্রাক্ষোভিক প্রস্তুতির উপর। শিক্ষার্থীর যদি কোনরকম ভাবে প্রস্তুত না থাকে তাহলে শিখন প্রক্রিয়া সম্ভব নয় যা , এই শিখন প্রক্রিয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক।

3. পাঠ্য বিষয় কে আনন্দদায়ক করে তোলা : শিক্ষার্থীর পাঠ্যবিষয় যত বেশী আনন্দদায়ক হবে শিখন প্রক্রিয়া তত সহজ হবে । শিক্ষার্থীর পাঠ্যবিষয় কে এমন ভাবে উপস্থাপিত করতে হবে যার ফলে শিক্ষার্থীরা বিরক্তিবোধ না হয়ে নিজের থেকেই শেখার তাগিদ অনুভব করে এবং শিক্ষার্থীরা ভুল প্রচেষ্টাগুলো বাদ দিয়ে সঠিক প্রচেষ্টা আয়ত্ত করতে পারে।

4. বারবার অনুশীলন : শিখন প্রক্রিয়া অনুশীলনের উপর নির্ভরশীল। শিক্ষার্থীরা যত বেশি অনুশীলন করবে তত বেশি সেই বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে । তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে এই অনুশীলন যেন যান্ত্রিক না হয়।

5. কর্মের মাধ্যমে শিখন : থর্নডাইকের শিখন কৌশলের কর্মের মাধ্যমে শিখনের উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

6. সহজ প্রক্রিয়া : এই শিখন কৌশল প্রক্রিয়ায় যেহেতু উন্নত মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয় না , কেবলমাত্র প্রচেষ্টা ও ভুলের সাহায্যেই এই শিখন প্রক্রিয়া ঘটে তাই শিক্ষা ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াকে প্রয়োগ করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

7. বাস্তবমুখী : এই শিখন প্রক্রিয়ার সাহায্যে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বাস্তবমুখী সমস্যার সমাধান করে এবং তা থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।

8. পূর্ব অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ : এই ধরনের শিখনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা পূর্ব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বর্তমান সমস্যার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং  সমাধান করতে পারে ।

          সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি যে, শিক্ষাক্ষেত্রে প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য শিখন প্রক্রিয়ার তুলনায় অপেক্ষাকৃত সহজ শিখন কৌশল হল প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন । যা শিক্ষার্থীর নিজের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে শেখায়। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে এই প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলকে ব্যাবহার করা হয়।








Saturday, 29 May 2021

প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো। Difference between Classical Conditioning and Operent Conditioning.

 Difference between Classical Conditioning and Operent Conditioning 

প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য 


1. প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন রাশিয়ান শরীরতত্ত্ববিদ আইভান প্যাভলভ (Ivan Pavlov)। 

        সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী বি. এফ. স্কিনার ।

2. প্যাভলভ ক্ষুধার্ত কুকুরের উপর গবেষণা করেছেন। 

       কিন্তু স্কিনার ক্ষুধার্ত ইদুরের ওপর গবেষণা করেছেন।

3. প্রাচীন অনুবর্তনে নির্দিষ্ট উদ্দীপকের উপস্থিতিতে আচরন সৃষ্টি হয়, তাই এটি হল " Type - I" বা "Respondent " বলে।

           অপরদিকে , সক্রিয় অনুবর্তনে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দীপকের উপস্থিতিতে আচরনের সৃষ্টি হয় না, তাই এটি হল "Type - II" বা অপারেন্ট

4. প্রাচীন অনুবর্তনে প্যাভলভ উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার সংযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ।

            অপরদিকে , সক্রিয় অনুবর্তনে প্রাণীর প্রতিক্রিয়ার ধারাবাহিকতার শৃঙ্খলার ওপর স্কিনার গুরুত্ব দিয়েছেন ।

5. প্রাচীন অনুবর্তনে প্রাণীর আচরন প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়।

        অপরদিকে সক্রিয় অনুবর্তনে অনুবর্তিত আচরন প্রাণীর ইচ্ছাধীন।

6. প্রাচীন অনুবর্তন প্রাণীর স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । 

          অপরদিকে, সক্রিয় অনুবর্তন প্রাণীর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । 

7. প্রাচীন অনুবর্তনে অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া সম্পুর্নভাবে প্রত্যাশামূলক ।

          অপরদিকে , সক্রিয় অনুবর্তনে প্রতিক্রিয়াগুলি সবসময় নির্দেশনামূলক।

8. প্রাচীন অনুবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে সময় ।

        অপরদিকে, সক্রিয় অনুবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রেষনা । 

9. প্রাচীন অনুবর্তনে শক্তিদায়ী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির আগেই শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থাপন করা হয়।

 যেমন : খাদ্যের প্রয়োগের দ্বারা লালক্ষরণের সৃষ্টি । 

            অপরদিকে, স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তনে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পরে শক্তিদায়ী উদ্দীপকের উপস্থাপন করা হয়।

 যেমন : লিভারে/বোতাম চাপ দেওয়ার আগেই খাদ্যবস্তুর উপস্থাপন । 



          শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন ও সক্রিয় উভয় অনুবর্তনই গুরুত্ত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের শিখনের কৌশল হিসাবে এই অনুবর্তনদ্বয়ের অবদান অনস্বীকার্য । 





মুদালিয়ার কমিশন (1952-53) Mudaliar Commission (1952-53)

 মুদালিয়ার কমিশন (1952-53) Mudaliar Commission Secondary Education Commission (1952-1953) মুদালিয়ার কমিশন (1952-53), মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন...